শিরোনাম
২৯ মে, ২০১৭ ১৮:১৮

মাগুরায় ১৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি

রাশেদ খান, মাগুরা

মাগুরায় ১৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি

মাগুরায় লিচু প্রায় শেষের দিকে। কৃষকরা জানিয়েছে এবার ১৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি বিক্রি হয়েছে। যা গত বারের তুলনায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা বেশি। লিচুগ্রাম খ্যাত সদর উপজেলার হাজরাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, মিঠাপুর, হাজিপুরসহ অন্তত ৫০ গ্রামের লিচু চাষিরা এ তথ্য জানিয়েছেন। সদর উপজেলার হাজরাপুর, হাজীপুর ও রাঘবদাইড় ইউনিয়নের ইছাখাদা, মিঠাপুর, গাঙ্গুলিয়া, খালিমপুর, মির্জাপুর, পাকাকাঞ্চনপুর, বীরপুর, রাউতড়া, বামনপুর, আলমখালী, বেরইল, লক্ষিপুর,  আলাইপুর , নড়িহাটিসহ ৩০টি গ্রামের চাষিরা গত ২ দশক ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই লিচু চাষ করে আসছে। চাষিদের অনেকেই লিচুর কুশি আশার সাথে সাথেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে দেন। আবার অনেকে লিচু পাকার পর বিক্রি করেন।

মাগুরার উপর দিয়ে ঝিনাইদহ হয়ে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার পথে জেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে ইছাখাদা পৌঁছলেই দেখা যায় রাস্তার দুইধারে সারি সারি লিচু বাগানের এ মনোরম দৃশ্য। লিচু গ্রামখ্যাত এসব এলাকায় প্রায় দেড় হাজার লিচু বাগান আছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। 

ইছাখাদার লিচুচাষী বিল্লাল হোসেনসহ অন্যরা জানান, এক সময় এই এলাকার কৃষকরা ধান-পাটসহ প্রচলিত ফসল চাষে অভ্যস্ত ছিল। যা থেকে তাদের উৎপাদন খরচ উঠত না। যে কারণে তারা পেঁপে পেয়ারার পাশাপাশি লিচু চাষ শুরু করে। পরবর্তীতে লিচু চাষ অপেক্ষাকৃত লাভজনক হওয়ায় গোটা এলাকার কৃষকরা লিচু চাষ শুরু করে। বর্তমানে হাজরাপুর, হাজিপুর, রাঘবদাইড়, আঠারোখাদা, মঘিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫০ গ্রামের কৃষকরা শুধু লিচুর চাষ করছে। অসংখ্য লিচু চাষী আছেন যারা শুন্য থেকে শুরু করে এখন লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন। এবার গোটা গ্রাম থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে তারা আশা করছেন। 

চাষীরা আরও জানান, লিচুর বাগান করতে প্রথম বছর একটু খরচ হয়। পরবর্তীতে তেমন আর উল্লেখযোগ্য খরচ নেই বললেই চলে। প্রতি বছর লিচুর ফুল আসলে শুধু গাছে স্প্রে ও সামান্য পরিচর্যা করতে হয়। এলাকার মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। এখানে বোম্বায়, চায়না থ্রী, মোজাফ্ফর ও স্থানীয় হাজরাপুরী জাতের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। মৌসুমের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারী ফড়িয়া ও আড়ৎদারা এসে লিচুর বাগান কিনে তা গাছ থেকে ভেঙে ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন। মৌসুমে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ট্রাক লিচু এই এলাকা থেকে চালান যায়।

আলাইপুর গ্রামের লিচু চাষী সিদ্দিক হোসেন জানান, ৬৫০টি গাছ নিয়ে তার একটি সুবৃহৎ লিচু বাগান রয়েছে। গত বছর যা ১৫ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এবার আরও দাম আশা করছেন। 

চাঁদপুর থেকে আসা লিচু ব্যাপারী রমজান আলী জানান, হাজিপুর, হাজরাপুরের লিচু স্বাদে সুমিষ্ট ও রসালো হওয়ায় সারাদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর তিনি ১৬ লাখ টাকার ৩টি বাগান কিনেছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ২১ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন।

বিডি-প্রতিদিন/২৯ মে, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর