৩০ মে, ২০১৭ ১৬:৩৬

পাবনায় মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি বহিষ্কার

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনায় মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি বহিষ্কার

পাবনার সুজানগরে ছাত্রলীগ নেতার হাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের রোকন বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামিম আদম লিটন তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্তিকে কেন্দ্র করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাইকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে একটি ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল অফিসের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করি। তিনি আরো বলেন, আমাদের জানা মতে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়েছিল তাতে শামিমের বাবার নাম নেই। সে তার বাবার নাম অন্তর্ভুক্তি করতে চাইলে আব্দুল হাই তাকে বাঁধা দেয়। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শামিম আব্দুল হাইকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। 

এ বিষয়ে আব্দুল হাই আক্ষেপ করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমি এ ঘটনায় খুবি লজ্জিত। এটা যদি আমার দলের লোক না হয়ে জামায়েত-শিবিরের লোক হতো তাহলে কোনো লজ্জার বিষয় ছিল না। কিন্তু দলের লোক হওয়াতে বিব্রত। তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে জানিয়েছি।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সুজানগর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শামিম আদম লিটনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর সুজানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।  

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনার পরে রাতেই কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে বহিষ্কার করেন। ওই বহিষ্কারাদেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের স্বাক্ষর রয়েছে বলেও দাবি করেন। 
এদিকে সুজানগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামিম আদম লিটন বহিষ্কারের পর ওই এলাকায় অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল উপজেলার অনেক ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। 

একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সুজানগর পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাব গ্রুপের আস্থাভাজন হওয়ায় শামিম আদম লিটন সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে ঢাকা থেকে এই কমিটি পাশ করিয়ে আনার পর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে। ত্যাগী ও প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সে তার অনুসারীদের কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করে সুজানগর উপজেলায় টেন্ডারবাজী, বালি মহালে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। শুধু তাই নয়, সে গড়ে তোলে লিটন বাহিনী নামের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। ওই বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর নির্যাতন চালাতেন ওই লিটন বাহিনীর লোকজন। 

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামিম আদম লিটন বলেন, আমি শারীরিকভাবে তাকে লাঞ্ছিত করেনি। তবে আমি এবং আমার সঙ্গে থাকা কয়েকজন উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়। 

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর