৩০ মে, ২০১৭ ১৬:৫৫

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র তাণ্ডবে বান্দরবানে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র তাণ্ডবে বান্দরবানে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

বান্দরবানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তাণ্ডবে ৭টি উপজেলায় অন্তত চার শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে প্রচুর গাছপালা, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলেরও। সোমবার রাত থেকে জেলায় বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে মোরা’র তাণ্ডবে জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমন্তবর্তী তুমব্র, ঘুমধুম, বাইশারী, আলীকদম, লামা, রোয়াংছড়ি, রুমা ও জেলা সদরের কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লামার পৌর এলাকার সহস্রাধিক কাঁচাপাকা ঘর আংশিক ও দুই শতাধিক সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন লামার ক্যাচিং থোয়াই মার্মাসহ অন্তত দুইজন। এছাড়া লামা-রূপসীপাড়া সড়ক, লামা-আলীকদম সড়কের ওপর গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২০টি ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড এবং সরই ইউনিয়নে ৩০টির মত ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায় এবং বগাইছড়ি, হারগাজা, সাফেরঘাটা ও বনপুর সড়ক এবং লামা-সুয়ালক, ক্যায়াজুপাড়া-লুলাইং ও ক্যয়াজুপাড়া-ধুইল্যাপাড়া সড়কের ওপর গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলার রোয়াংছড়ি ও আলিকদম উপজেলায় বেশ কয়েকটি বড় আকৃতির গাছ উপড়ে পড়েছে, বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ২০ ঘরবাড়ি। থানচি উপজেলা থেকে তিন্দু, রেমাক্রি ও বড়মদক এলাকায় আজ সকাল থেকে পর্যটকবাহী সব ধরণের নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আটকে পড়া পর্যটকদের দুর্গম তিন্দু ও রেমাক্রি এলাকায় নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিজিবির মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নৌ চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে।

এদিকে সকাল থেকে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের আশংখা দেখা দিয়েছে। তাই বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলায় ৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয় বলে জানান এনডিসি হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় তিন পার্বত্য জেলার জন্য ২০ মে.টন খাদ্যশস্য মজুদ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সাথে মোরা মোকাবেলায় ১০ লক্ষ টাকা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার পর এই খাদ্যশস্য ও নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আজ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন সভায় আলোচনা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মার্মা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরি চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমাসহ পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রয়োজনে বাড়ানো হবে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর