২৭ জুন, ২০১৭ ১০:৩৪

সাভার ও আশুলিয়ার পার্কগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

নাজমুল হুদা, সাভার :

সাভার ও আশুলিয়ার পার্কগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

ঈদের ছুটিতে ঢাকার মতই ফাঁকা হয়ে যায় সাভার শিল্পা এলাকার। আর এ সুযোগে নিরানন্দে ঘুরে বেড়ান শহরবাসী। যানজটমুক্ত পরিবেশে অনেকেই সন্তানদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাভার উপজেলার বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্রে। 

তবে বৃষ্টি না থাকায় বিনোদন প্রেমীদের উপস্থিতিতে ঈদের দিন থেকে সাভারে ও আশুলিয়ার থিম পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্কসহ বেশ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে। এসব পার্কে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। 

সরজমিনে এসব পার্ক ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ-শিশু নগর জীবনের কোলাহল থেকে একটু দূরে সাভারে ও আশুলিয়ার বিনোদন কেন্দ্রে আনন্দে মেতে উঠেছেন। থিম পার্কগুলোতে প্রবেশের মুখে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বিশেষ করে সকাল থেকে পার্ক গুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এছাড়া জাতীয় স্মৃতিসৌধ, থিম পার্ক, ভ্রমণ স্পট, মিনি চিড়িয়াখানা, বংশাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট, যুমনা পার্ক, নীলা বর্ষা পার্ক, চামড়া শিল্প নগরী হরিণধরা এবং বেশ কিছু বাগান বাড়িতে ভ্রমণপিপাসুরা দলে দলে ভিড় করছেন। ঈদের ২য় দিন আজ সকাল থেকে এসব বিনোদন কেন্দ্রে এমনই দৃশ্য। এ বছর কোনো বৃষ্টি না থাকায় বিনোদন প্রেমীদের উপস্থিতি ছিল অন্যবাবের চেয়ে একটু  বেশি। 

আশুলিয়ার নন্দন পার্ক, থিম পার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডমে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকে পার্কগুলোতে প্রবেশের জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর ফিরে যাচ্ছেন। দর্শনার্থীরা বিভিন্ন রাইডে চড়তে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তবু যেন বিরক্তি বা ক্লান্তি নেই তাদের মাঝে। 

চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসায়ী মাহামুল হাসান তার ছেলে জারিফ আহমেদ সম্পদকে নিয়ে ঘুরতে এসে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অবরুদ্ধ পরিবেশ থেকে নন্দন পার্কে খোলামেলা জায়গায় খুব ভালো লাগছে। শহরে জীবন থেকে খানিক রিলাক্স। তিনি আরো বলেন, বাপ-ছেলে খুবই মজা করেছি যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একই মনোভাব জানালেন গাজীপুর থেকে আসা আবুল হাসেম। সাভারের ভাকুর্তা থেকে আসা  সাংবাদিক আহসান উল্লাহ বাংলাদশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্কটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ ও ঘুরে বেড়িয়ে অনেক মজা করলাম, দারুন লাগছে। 

নন্দন পার্কের হেড অব মার্কেটিং জোবায়েদ আল-হাফিজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তাদের পার্কে সব রাইডসে ভিড় রয়েছে। তবে ওয়াটার কোস্টার, প্যাডেল বোট, কিডস ড্রিম ওয়ার্ল্ড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ডসহ বেশ কয়েকটি রাইডসে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর চড়তে হচ্ছে। তিনি জানান, ঈদের দিন থেকে আবহাওয়া খুবই ভালো থাকায়, কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এ বছর দর্শনার্থীদের ভিড় অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে একটু বেশি। 

থিম পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডমেও প্রবেশে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। ভেতরে বিভিন্ন রাইডসে চড়তে টিকিট সংগ্রহের পর লম্বা লাইন দেখা গেছে। প্রায় সব রাইডসে যেন মানুষের মিছিল। তবে চরকা বুডির চক্করে লোক সমাগম বেশি লক্ষ করা গেছে। এ পার্কে বেড়াতে আসা গাড়ী চালক শরীফ দেওয়ান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে, রাইডগুলোতে চড়ে খুব আনন্দ পেয়েছি। তবে ভেতরে জায়গা খুবই সীমিত। 

এ ছাড়াও সাভারে রয়েছে মনোরম কারুকার্য শৈলীতে তৈরি লাখো শহীদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ১৬ ডিসেম্ভর ও ২৬ মার্চ ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে এ স্মৃতিসৌধকে সাজানো হয়ে থাকে। ঈদ, পূজা পার্বনসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে মানুষ দল বেঁধে ভিড় করেন এখানে। ঈদের আমেজে প্রতি দিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় করছেন জাতীয় সৌধে। 

এ ছাড়াও নৌকা ভ্রমণ ও ট্রলারে ঈদ আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের বিনোদনপ্রেমী। ভ্রমণপিপাসুরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাভার সেনানিবাস নিয়ন্ত্রিত মিনি চিড়িয়াখানায়। মিনি চিড়িয়খানায় ঘুরতে আসা রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি গ্রামের ডা. কামরুজ্জামান তার দুই ছেলে নিয়ে ঘুরতে এসে বলেন, সারা দিন বাসায় বসে অলস সময় কাটান তিনি। ঈদুল ফিতরের ২য় দিনে ঘুরতে এসে ভালোই লাগছে। তবে পশু-পাখি আরো বেশি সংগ্রহে থাকলে ভালো হতো। এ ছাড়া বংশাই নদীতে শত শত ছোট নৌকায় চড়ে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। 

ধলেশ্বরী নদীর তীরে রয়েছে ফেরদৌ-ই-ব্যাঁরী। শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আগত অভিভাবকদের ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডের প্রবেশ মূল্য এবং রাইডসের জন্য যে টাকা নেয়া হচ্ছে তা রাইডসের মানের অনুপাতে অনেক বেশি। শিল্প পুলিশের পরিচালক শামীমুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্ক ৪টিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও নিজস্ব সিকিউরিটির পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


বিডি প্রতিদিন/২৭ জুন ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর