২৮ জুন, ২০১৭ ২১:১৬

পাহাড় ধস কেড়ে নিলো ঈদের আমেজ

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি:

পাহাড় ধস কেড়ে নিলো ঈদের আমেজ

রাঙামাটিতে পাহাড় ধস কেড়ে নিলো ঈদের সব আমেজ ও প্রাণচাঞ্চল্য। আসেনি পর্যটক, নেই কোনও উচ্ছ্বাস, নেই আনন্দ জোয়ার। তাই পাহাড়ে মানুষগুলোর মনও ভাল নেই। এখনো থামেনি বৃষ্টি, কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, আবার কখনো ভারী বর্ষণ। 

রাত দিন চলছে মুষল ধারে বৃষ্টি। তাই বাড়ছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। ঈদের দু’দিন সূর্যের হাসির দেখা মিললেও। বুধবার মেঘাচ্ছন্ন আকাশে আবারও নামে অবিরাম বৃষ্টি। এ বৃষ্টির পানি পাহাড়ে বসবাসরত মানুষগুলোকে আবারও নিয়ে যাচ্ছে অজানা শঙ্কায়।

জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলের সঙ্গে পাহাড়ের হৃদ্যতা দেখে অনেকে অভিভূত হন। তাই প্রতি বছর ছুঠে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক। কিন্তু এবার রাঙামাটির পর্যটন র্স্পটগুলো ছিল ভিন্ন চিত্র। একদম অচেনা। রাঙামাটি পর্যটন, রাজবন বিহার, ডিসি বাংলো, সুখী নীলগঞ্জ, শুভলংসহ সব পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক নেই বললেই চলে। 

ঈদের দিন থেকে আজও নেই কোনো পর্যটক। লাভের মৌসুমে ব্যবসায়ীরা এখন গুণছেন লোকসান। ১৩ই জুন রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাঙামাটির রাজস্ব আয়ের অন্যতম খাত পর্যটন।
 
ঈদ উপলক্ষে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনও কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা যায়নি। পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটির সঙ্গে সারা দেশের ভারি যানবাহনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও ভয়-ভীতি থাকায় পর্যটক কমে গেছে। ফলে লোকসানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে পর্যটন কমপ্লেক্সের।
এবছর বার্ষিক আয়ের টার্গেট পূরণ নাও হতে পারে বলে মনে করেন, রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় আমাদের হোটেলে গত ১৫দিনের যা বুকিং ছিল তা বাতিল করেছে পর্যটকরা। এ মধ্যে নতুন কোন বুকিং আমরা পাইনি। তাছাড়া ঈদের কোন পর্যটকের দেখা মেলেনি।

অন্যদিকে রাঙামাটিতে পর্যটক না আসায় কাপ্তাই লেকে নৌযান ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শতাধিক নৌযান মালিক ও শ্রমিকরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বেকার ঘাটে বসে দিন কাটাচ্ছে অনেকেই।

রাঙামাটি পর্যটন নৌ-যান মালিক আলাউদ্দিন জানান, রাঙামাটির পর্যটনে এরকম খারাপ পরিস্থিতি আগে কোনদিন দেখা যায়নি। পাহাড় ধসর কারণে মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করায় ঈদের মৌসুমেও পর্যটক আসছেনা। পর্যটক না আসায় কারণে নৌ-যান ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত শ্রমিক ও মালিকরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। 

অন্যদিকে একই অবস্থা টেক্সটাইল ব্যবসা, কুঁটির শিল্প ও তাঁত বস্ত্রে শিল্পে। রাঙামাটি পর্যটক না আসার কারণে ধস নেমেছে এসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও। 

তবে স্থানীয়রা আশা করছেন রাঙামাটি- চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ সুবিধা চালু হলে আর বিকল্প সড়ক তৈরি করা গেলে হয়তো আবারও পাহাড়ের মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। তখন আসবে দেশি-বিদেশী পর্যটকও।

বিডি প্রতিদিন/ ২৮ জুন, ২০১৭/ এ মজুমদার/ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর