২৯ জুন, ২০১৭ ১৪:৫০

শরীয়তপুরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার পূর্বচরসোন্দি গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গৃহবধূ রেশমা বেগম (২২) ওই গ্রামের ফরিদ সরদারের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদরহাসপাতালেরমর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

লাশ উদ্ধারের আগে থেকেই স্বামী ফরিদ সরদার ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়। রেশমার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকার দাবিতে রেশমাকে হত্যার পর তার লাশ ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

রেশমা মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সূর্য্যমনি গ্রামের জুলহাস ঘড়ামির মেয়ে এবং  শরীয়তপুর সদরের পূর্বচরসোন্দি গ্রামের ফরিদ সরদারের স্ত্রী।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রেশমা বেগমকে ২০১০ সালে ফরিদ সরদারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর রেশমার পরিবার ফরিদকে দুই লাখ টাকা দেয়। আরো দুইলাখ টাকার জন্য ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা রেশমার পরিবারকে চাপ দিতে থাকে। তারা টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে রেশমাকে নির্যাতন করা হয়। এ নিয়ে ২০১৫ সালে স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে বিচার সালিশ হয়। তখন ফরিদ ও তার পরিবার এমন কাজ আর কখনো করবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেয়। তারপর গত কিছু দিন ধরে আবার দুই লাখ টাকা এনে দেবার জন্য রেশমাকে মারধর করতে থাকে ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে গ্রামবাসীরা ফরিদের বসত ঘরের পিছনে একটি গাছের সাথে রেশমার লাশ ঝুলতে দেখে। ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানাতে গেলে তাদের ঘর তালা বদ্ধ দেখতে পায় গ্রামবাসী। তখন পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ বেলা ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। খবর পেয়ে রেশমার পরিবারের সদস্যরা ওই গ্রামে ছুটে আসে।

রেশমার বাবা জুলহাস ঘড়ামি বলেন, ফরিদ ঢাকায় একটি গাড়ি মেরামত কারখানায় কাজ করত। মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে তাকে দুই লাখ টাকা দিয়েছিলাম। সে আরো দুই লাখ টাকা দেয়ার জন্য আমাদের চাপ দিচ্ছিল। আমি গরিব মানুষ কোথায় টাকা পাব? তাই দিতে পারিনি। টাকা না দেয়ায় সে আমার মেয়েকে মারধর করত। মেয়েকে নির্যাতনের বিষয়টি গ্রামের মুরব্বিদের জানালে তারা সালিশ করেছিল। ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা এভাবে আমার মেয়েকে টাকার জন্য মেরে ফেলবে তা ভবতেও পারিনি।

রেশমার ভাই সেলিম ঘড়ামি বলেন, রেশমার লাশ গাছে ঝুঁলিয়ে রেখে ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গেছে। আমার বোনের ৬ বছর বয়সি ছেলে ও তিন মাস বয়সি নবজাতক শিশুকন্যাকে নিয়ে তারা পালিয়েছে।

পালং মডেল থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় মালার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ফরিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারেরর চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।


বিডি-প্রতিদিন/২৯ জুন, ২০১৭/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর