বিবাহ বিচ্ছেদের মাত্র ২০ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দু'দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে প্রাণ গেল দুই গ্রামের দুই তরুণ কলেজ ছাত্রের। নিহতরা হলো- পাইকশা গ্রামের দানেজ শেখের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ফরিদুল ইসলাম ও বাগবাড়ী গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে ও কারিগরী কলেজের ছাত্র রিপন হোসেন। পরিবার দুটি তাদের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সংঘর্ষে শুধু দুটি তাজা প্রাণই নয়, সংঘর্ষে ভাঙচুরসহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকার। ঘটনার জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ জুন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার পাইকশা গ্রামের একটি মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদের উৎকোচের ২০ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পাইকশা ও বাগবাড়ী গ্রামের যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিষয়টি দু'দফা গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বুধবার দুপুরে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পাইকশা গ্রামের কলেজছাত্র ফরিদুল ইসলাম ও বাগবাড়ী গ্রামের কারিগরি কলেজছাত্র রিপনসহ ১৫ জন আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদুল বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদুল ও বৃহস্পতিবার রিপন মারা যায়। দু'জনের লাশ বাড়ীতে নিয়ে আসলে পরিবারের মধ্য শোকের ছায়া নেমে আসে। সংঘর্ষ চলাকালীন পাইকশা বাজারে প্রায় ১৫টি দোকান ভাঙচুর ও উভয়গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। দু'জন মারা যাবার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুটি গ্রাম পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। হত্যাকাণ্ডের জন্য পরস্পর গ্রামবাসীকে দায়ী করছে।

জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকী দোষীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থার গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে জানান, নিহত দুজনই পরিবারের একমাত্র ছেলে ও মেধাবী ছাত্র ছিল। বিষয়টি মাথায় রেখে যতদূর সম্ভব জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা দেয়া হবে। 

পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ফরিদুল হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। শিপন হত্যা ও ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনাও মামলা হবে। দোষীদের ইতোমধ্যে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে সাতজনকে আটক করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার