২৯ জুন, ২০১৭ ১৬:৪৬

চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস-এ আবারও চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতি'র মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকারও করেছে ল্যাবওয়ান কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে লিখিতভাবে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও মেডিকেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন মৃত প্রসূতির পিতা। 

অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৪ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসে কর্মরত অফিস সহায়ক ও শহরের আরামবাগ এলাকার অধিবাসী মোঃ আবু সুফিয়ানের সন্তান সম্ভবা মেয়ে হাবিবা খাতুন মুক্তা'র (২৪) প্রসব বেদনা উঠে। বেলা পৌনে দুইটার দিকে তাকে পার্শ্ববর্তী পিটিআই সড়কস্থ ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শহীদুল ইসলাম খান রোগীকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন। পরে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখে ডা. শহীদুল ইসরাম রোগীর স্বজনদের জানান, রোগীর নরমাল ডেলিভারী সম্ভব নয়, তাই এই মূহুর্তে রোগীর সিজার করতে হবে। 

এসময় রোগীর পিতা মোঃ আবু সুফিয়ান তার মেয়ের কথা ভেবে ডাক্তারকে সিজার করতে বলেন। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক আর কোন পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়াই রোগীকে স্যালাইন দিয়ে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। ওইসময় এ্যানেসথেসিষ্ট ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে ডা. শহিদুল ইসলাম খান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে কর্মরত) নিজেই রোগীকে অচেতন করার জন্য ইঞ্জেকশন দিলে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই বেলা আড়াইটার দিকে প্রসুতি হাবিবা খাতুন মুক্তা মারা যান। 

মুক্তার আড়াই বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। এব্যাপারে মুক্তার পিতা মোঃ আবু সুফিয়ান জানান, গত ২৭জুন বিষয়টি মিমাংসার জন্য ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস এর পরিচালক মি. ডলার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি মিমাংসা নয় অপরাধীর শাস্তি চান। বিষয়টি নিয়ে ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস এর পরিচালক মি. ডলার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রসূতির মৃত্যুর কথা স্বীকার করে জানান, মিমাংসার জন্য নয় শান্তনা দেয়ার জন্য তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি ডা. শহিদুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। 

পরে ডা. শহিদুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই রোগীর অবস্থা ভাল ছিলনা। তাকে তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত রোগীটি মারা যান। এদিকে বুধবার জেলা সিভিল সার্জনের কাছে মৃত প্রসূতির পিতা মোঃ আবু সুফিয়ান ডা. শহিদুল ইসলাম খান ও ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানান। সিভিল সার্জন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, এর আগে ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস এ কর্মরত ডা. শহিদুল ইসলাম খানের ভুল চিকিৎসায় আরও এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে ঘটনাটি লাখ টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগে ল্যাব ওয়ান মেডিকেল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষকে লাখ টাকা জরিমানা করেন।

 

বিডি প্রতিদিন/২৯ জুন ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর