২৯ জুন, ২০১৭ ২০:৩৯
লামায় অবৈধ বালু উত্তোলন প্রসঙ্গ

'সবাই ম্যানেজ, নিউজ করে লাভ নেই'

লামা প্রতিনিধি

'সবাই ম্যানেজ, নিউজ করে লাভ নেই'

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পুলু খাল, হরি খাল ও ডলু খালের কমপক্ষে ২৫টি পয়েন্ট থেকে অবৈধ ভাবে সেলু মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। এতে করে খালের দু’পাড় ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, পাহাড় ও বসতবাড়ি। 

কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের জৈনক এক কর্মকর্তা বলেন, লামা উপজেলার কোথাও বালু মহালের পারমিট নেই। বিশাল এই বালু সন্ত্রাসের বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। অবৈধ বালু উত্তোলন দ্রুত বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করা হবে। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সরই ইউনিয়নের পুলু, ডলু ও আন্দারী খালের প্রায় ২৫টির অধিক স্থান থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা ও সরই এলাকার সরকার দলীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন এই পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত। লোহাগাড়া উপজেলা ও স্থানীয় প্রভাবশালী জনৈক ইদ্রিস কোম্পানী, ইসলাম কোম্পানী, শরিফ মাঝি, ছৈয়দ নুর, ফারুক ড্রাইভার, নওশাদ মিয়া, মোঃ রুবেল এই বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত। তাদের পরোক্ষ সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন। 

এলাকাবাসী অভিযোগ করে আরও বলেন, ব্যাপক বালু তোলার কারণে এলাকার অর্ধশত ব্রিজ, কালভার্ট ও কয়েকটি রাস্তাঘাট বিলীনের পথে। বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষমতাবান হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সরই ইউনিয়নের ধুমচা বিল, পুলাং পাড়া, কেয়াবন্যা, হাসনা ভিটা, কিল্লাছডা, ডলুছড়ি বাজার পাড়া, ঝটকি বনিয়া পাড়া, আমতলী মুসলিম পাড়া, কিল্লাখোলা সহ অসংখ্য স্থান থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে হরিখালটির মৃত্যু হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ৬ মাস খালটিতে পানি থাকেনা।
  

বালি উত্তোলনে প্রশাসনের অনুমতি আছে কিনা জানতে মুঠোফোনে কথা হয় বালি ব্যবসায়ী ইদ্রিস কোম্পানী ও ইসলাম কোম্পানীর সাথে। তারা জানায়, "বালু তোলার অনুমতি নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে বালু উত্তোলন। সবাই ম্যানেজ, নিউজ করে লাভ নেই।"
 
সরই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম সাক্ষাতে দেখা হলে জানান, বালু ব্যবসায়ীরা আমাদের নিষেধ মানেনা।  সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ-উল আলম বলেন, বালু তোলা ও পরিবহনের কারণে সরকারের কয়েক কোটি রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভার্ট ধ্বংস হেয়ে গেছে। এদিকে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু-এই বিষয়ে বক্তব্য দিতে অনিহা প্রকাশ করেন। 

   

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ জুন, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৪

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর