২১ জুলাই, ২০১৭ ১৮:০৪

ওমানে যুবক খুনের মামলায় বরিশালে পিতা-পুত্রের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ওমানে যুবক খুনের মামলায় বরিশালে পিতা-পুত্রের কারাদণ্ড

প্রতীকী ছবি

বরিশালের বাকেরগঞ্জের মাহমুদুল হাসানকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওমানে নিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পাঁচারকারী পিতা-পুত্রকে দণ্ডবিধির পৃথক দুটি ধারায় কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশালের মানবপাঁচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের আসামি পিতা আব্দুল কাদের সিকদারের উপস্থিতিতে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং পুত্র অহিদুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে ১২ বছর কারাদণ্ড ও সাড়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অহিদুল বর্তমানে ওমানে রয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্তরা বাকেরগঞ্জের মঙ্গলসির বাসিন্দা। 

সংশ্লিস্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারি আজিবর রহমান জানান, পটুয়াখালী দুমকির রাজাখালীর ক্বারী মো. ইব্রাহীম বাকেরগঞ্জ পাঠ নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক ও পার্শ্ববর্তী হাওলাদার জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করেন। তার ছেলে মাহমুদুল হাসান বেকার থাকায় একই এলাকার অহিদুল তাকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় ওমানে চাকরির প্রলোভন দেখায়। ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর মাহমুদুলকে ওমান পাঠাতে ৮০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৮ জুনের মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে এবং সরাসরি বাকী টাকা নিয়ে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাহমুদুলকে ওমান নেয় অহিদুল। সেখানে গিয়ে ২ মাস পর মাহমুদুল ফোনে তার পরিবারকে জানায়, তাকে যে কাজ দেয়ার কথা বলে নেয়া হয়েছিল তা না দিয়ে মরুভূমিতে আটকে অসহনীয় কষ্টের কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়া তার পাসপোর্ট সহ সকল কাগজপত্র আটকে রাখে অহিদুল। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে মাহমুদুলের ভাই আব্দুল কাদির সহ কয়েকজন অহিদুলের পিতা আব্দুল কাদেরের কাছে গিয়ে ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলে আরো ১ লাখ টাকা দাবি করে। ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট অহিদুলের মা মিনারা বেগম মাহমুদুলকে জানায় মাহমুদুল অসুস্থাবস্থায় (৩১ জুলাই) ওমানের হাসপাতালে মারা গেছে। এ বিষয়ে ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে তারা জানতে পারেন ৩১ জুলাই ওমানে অপর এক বাংলাদেশীর হাতে তার ছেলে মাহমুদুল খুন হয়। তার লাশ সেখানে দাফন করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারী নিহতের বাবা মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে অহিদুল, তার পিতা কাদের, মা মিনারা বেগম এবং খালা ফরিদা বেগমকে আসামি করে মামলা করেন। একই বছর ২১ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ওসি তরিকুল ইসলাম ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ট্রাইব্যুনাল ৯ জনের সাক্ষ্য শেষে পিতা ও পুত্রকে পৃথক দুটি ধারায় কারাদণ্ড দেন। একই সাথে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় মিনারা বেগম ও ফরিদা বেগমকে খালাস দেন।


বিডি প্রতিদিন/২১ জুলাই ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর