২৪ জুলাই, ২০১৭ ১৯:০৪

সিজারের রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই অপারেশন শেষ!

শেরপুর প্রতিনিধি:

সিজারের রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই অপারেশন শেষ!

প্রতীকী ছবি

শেরপুরে সিজারের রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই অপারেশন শেষ করার অভিযোগ উঠেছে এক গাইনী ডাক্তারের বিরূদ্ধে। এ ব্যাপারে আজ জেলার সিভিল সার্জনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শ্রীবরদী উপজেলার টেংগর পাড়া এলাকার সৈয়দ মেজবা উদ্দিন বখতিয়ারের ছেলে জনৈক মোস্তাক আহাম্মেদ বাবু। আবেদনের কপি জেলা চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিএমএর সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া হয়েছে। 

অভিযোগে তিনি লেখেন, গত ৫ জুলাই সকাল ৯ টার দিকে তার স্ত্রী মোছা. ফারজানা ইয়াছমিন লাভনীকে শহরের নারায়ণপুরস্থ জেনী জেনারেল হাসপাতালে সিজার করেন গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. মায়া হোড় হাসপাতালে ৫ দিন অবস্থানের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে রিলিজ দেন। এর ৩ দিন পর রোগী জ্বরায়ু দিয়ে পচন্ড রক্তপাত ও ব্যাথা হয়। এতে রোগী দুর্বল হয়ে পরে। গত ১৭ জুলাই আমার স্ত্রীকে আবার ডা. মায়া হোড়ের কাছে নিয়ে যাই। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে ডা. দ্রুত আল্ট্রাসোনোগ্রাফ করতে বলেন। আল্ট্রাসোনোগ্রাফে দেখা যায় রোগীর পেটে গজ ব্যান্ডেজ রয়ে গেছে। ডা. মায়া হোড় নিজেই রোগীকে ডিএনসি করে গজ ব্যান্ডেজ অপসারণ করেন। ডিএনসি করার পর রোগীকে বাড়িতে নিয়ে গেলে আবারও শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। উপায়ন্তর না পেয়ে ১৮ জুলাই রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরের উত্তরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

বর্তমানে রোগী জীবন মৃত্যুর সহিত পাঞ্জা লড়ছে। আবেদনকারী ঐ ক্লিনিকের নানান অব্যবস্থাপনার কথা আবেদনে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন ডা. মায়া হোড় ও ক্লিনিকের অবহেলার কারণে আমার স্ত্রী আজ মৃত্যু পথযাত্রী। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে রোগীর সামান্য উন্নতি হয়েছে। এ ব্যাপারে ক্লিনিকের মালিক জায়েদুল রশিদ শ্যামল জানিয়েছেন অপারেশন করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ডাক্তারের এখতিয়ারভূক্ত। ক্লিনিকের কোন অবহেলা নেই। ডা. মায়া হোড় বলেছেন, রোগীর পেটে কোন গজ ব্যান্ডেজ ছিল না। রোগীকে কোন প্রকার আল্টাসোনোগ্রাফিও করা হয়নি। অভিযোগ মিথ্যা। তবে মোস্তাক আহাম্মেদ বাবু জানিয়েছেন ডা. মায়া হোড় বাঁচার জন্য মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি দ্বিতীয় বার ডিএনসি করে চারটি দুগন্ধযুক্ত রক্তাক্ত গজ বের করেছেন। যা আমি নিজে ও আমার আপাকে দেখানো হয়েছে। এক পর্যায়ে ডাক্তার বিষয়টি নিয়ে ক্লিনিকের মালিককে বকা দিয়ে চলে যান। দুই বার রোগীকে অপারেশন করে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। অপারেশন ও পরবর্তী ডিএনসি সংক্রান্ত দুটি ব্যবস্থাপত্রই আমার কাছে আছে। পরবর্তীতে ঝামেলা হবে ভেবেই ঐ গজ ব্যান্ডেজ ও আল্টাসোনোগ্রাফ রিপোর্ট আমাকে দেওয়া হয়নি। 

এ ব্যাপারে জেলার সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সেলিম মিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করার প্রস্তুতি চলছে। তবে ঐ ডাক্তারের নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য তাকে ইতি মধ্যেই নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে বদলি করা হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর