মংলা বন্দরের জট কমাতে শীঘ্রই প্রায় ৮ শত কন্টেইনার ও ৫০টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামের উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সময় মত আমদানিকারকেরা তাদের পণ্য ছাড় করিয়ে না নেয়ায় এবং দীর্ঘদিন ধরে বন্দর জেটি ও ইয়ার্ডে পড়ে থেকে জটলার সৃষ্টি হওয়ায় ইতিমধ্যে এ সকল পণ্যের নিলামের সকল প্রস্তুতি-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মংলা কাস্টমস হাউস সূত্র জানা যায়, দীর্ঘ ২-৩ বছরেরও অধিক সময় যাবৎ বন্দর জেটি, ইয়ার্ডসহ বিভিন্নস্থানে প্রায় ৮শত কন্টেইনার ও প্রায় ৫ বছর ধরে শেড, কার ইয়ার্ডে ৫০টি রিকন্ডিশন বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ, প্যাজেরের মত নামি-দামি গাড়ি পড়ে আছে। এ সকল পণ্যের মালিক বা আমদানিকারকেরা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও তারা সেগুলো ছাড় করিয়ে নেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে এ সকল আমদানি পণ্য ছাড় করিয়ে না নিলে সরকারই এর মালিক হয়ে যায়। ফলে ৩০ দিনের পর ওই সকল পণ্যের নিলাম দেয়ার বিধি-বিধান রয়েছে। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে গত ১ বছর নিলাম অনুমোদন বন্ধ ছিল। মংলা কাস্টমস হাউসে নব নিযুক্ত কাস্টমস কমিশনার মো. মারগুব আহমদ দায়িত্ব গ্রহণের পর বন্ধ থাকা নিলাম কার্যক্রম পুনরায় চালু করেছেন। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই গত ২৫ জুলাই প্রায় ২শ ৫০টি গাড়ির নিলাম দিয়েছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৮শত কন্টেইনার পণ্য ও ৫০টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামের সকল ধরণের প্রস্তুতি জোরেশোরে চলছে। যে কেউই অংশ গ্রহণ করতে পারবেন এ নিলামে। বন্দর ব্যবহারকারীরা এইচ এম দুলাল অভিযোগ করে বলেন, কতিপয় গাড়ি আমদানিকরাকেরা এ বন্দরকে গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করছেন। গাড়ি এনে বছরের পর বছর ফেলে রেখে জটলার সৃষ্টি করে চলেছেন। শুধু নিলাম নয় এ সকল আমদানিকারকদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাও প্রয়োজন।
মংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. মারগুব আহমদ বলেন, দিনকে দিন এ বন্দরের কার্যক্রম ও গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণও। তাই বন্দরের চলমান কন্টেইনার ও গাড়ির জট কমানোর জন্য নিলামের এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার পাশাপাশি নিজস্ব ওয়েবসাইটেও নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। তবে আগামীতে টেলিভিশনের স্ক্রলেও নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচার/প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া নিলামে অংশ গ্রহণকারী সর্বোচ্চ দরদাতারাই পণ্যের দাবিদার হবেন বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কমিশনার।মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান বলেন, বন্দরের কন্টেইনার ও গাড়ির জট কিভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্টদের দপ্তরে আলাপ-আলোচনা চলমান রয়েছে। আলোচনার প্রেক্ষিতেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কন্টেইনার ও গাড়ি নিলামের উদ্যোগ নিয়েছেন। ৮শত কন্টেইনার পণ্যসহ দফায় দফায় গাড়ির নিলাম হলে জট কমার পাশাপাশি বন্দরে অনেক খালি জায়গার সৃষ্টি হবে। এতে বন্দর ব্যবহারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে এ বন্দর ব্যবহার ও তাদের আমদানি-রপ্তানী পণ্য ভালভাবে রাখতে পারবেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার