শিরোনাম
২৮ জুলাই, ২০১৭ ১৩:২৪

৩৫ টাকা চুরির অপরাধে মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি

৩৫ টাকা চুরির অপরাধে মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা!

ফরিদপুরের মধুখালীতে মাত্র ৩৫ টাকার জন্য ১০ বছর বয়সী মেয়ে হিরাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে  হারুন শেখ। এ ঘটনায় মধুখালী থানা পুলিশ হারুন শেখকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হারুন শেখ মেয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হত্যার পর মেয়ে হিরার লাশটি হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় হারুন শেখ। এ ঘটনায় হিরার নানা লিয়াকত শেখ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের লক্ষনদিয়া গ্রামের ভ্যান চালক হারুন শেখ তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও প্রথম পক্ষের দু সন্তান হিরা ও শোয়াইবকে নিয়ে বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে হিরা তার বাবা হারুন শেখের পকেট থেকে না বলে ৩৫ টাকা নেয়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে হারুন শেখ টাকা চুরির অপরাধে হিরাকে বেদম মারপিট করে। একপর্যায়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হিরাকে হত্যা করে। পরে হিরার লাশটি মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ শিশু হিরার লাশটি থানায় নিয়ে আসে। 

বৃহস্পতিবার রাতে মধুখালী পৌর এলাকা থেকে হারুন শেখকে আটক করা হয়। হারুন শেখ জানিয়েছেন, তার মেয়ে মাঝে মধ্যেই পকেট থেকে টাকা চুরি করতো। সেদিন তার পকেট থেকে ৩৫ টাকা চুরি করে। বাসায় আসার পর মেয়েকে টাকা চুরির কথা বললে সে অস্বীকার করে। রাগের মাথায় মেয়েকে পিটিয়ে এবং পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। লাশটি ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখতে গেলে লোকজন এসে পড়ায় সে পালিয়ে যায়। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হারুন শেখের ছোট ছেলে শোয়াইব (৭) জানায়, বাবা বাসায় এসে আমাকে ও বোনকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। পরে বোনকে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলে। আমি অনেক কান্না করলেও বাবা বোনকে মেরে ফেলে। 

ঘটনার সময় হারুন শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী বাসায় থাকলেও সে অন্য ঘরে কাজ করছিল বলে জানায়। হারুন শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী মানসিক প্রতিবন্ধী বলে জানায় স্থানীয়রা। 

বাবা হারুন শেখ কিভাবে তার বড় বোন হিরাকে হত্যা করেছে তার সাক্ষ্য দিয়েছে শোয়াইব। হিরা স্থানীয় ভুষনা লক্ষনদিয়া প্রাইমারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী ছিল। 

নওপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ভুষনা লক্ষনদিয়া প্রাইমারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মাত্র ৩৫ টাকার জন্য ফুটফুটে একটি শিশুকে এভাবে হত্যা করা কোনোমতেই মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনায় বাবা হারুন শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। শিশু কন্যাকে হত্যার অভিযোগে হিরার নানা লিয়াকত শেখ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই হারুন শেখকে আসামী করে মধুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানিয়েছেন, মেয়েকে হত্যার অভিযোগে আটক হারুন শেখের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মেয়েকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

বিডি প্রতিদিন/২৮ জুলাই, ২০১৭/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর