যমুনার নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর, কালিহাতী, মির্জাপুর, বাসাইল, গোপালপুর ও ভূঞাপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এতে সাতটি উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় গোপালপুর-তারাকান্দি সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ছয় সেন্টিমিটার পানি বেড়ে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ২৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে জামালপুরের তারাকান্দি-গোপালপুর-ভুয়াপুর সড়কের পিংকনা অংশের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় গোপালপুর ও ভুঞাপুরের অন্তত ১০টি গ্রাম নতুন করে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় টাঙ্গাইলের মানুষদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
গোপালপুর উপজেলার গুলিপেঁচা ও ভূঞাপুর উপজেলার চুকাইনগর, অর্জুনা ও কুঠিবয়ড়া পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে তারাকান্দি-গোপালপুর -টাঙ্গাইল সড়ক। এ সড়ক ভেঙে গেলে উত্তর টাঙ্গাইলের গোপালপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার বেশিরভাগ অংশই বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে।বন্যার পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ঘরের মধ্যে উঁচু বাঁশের মাচা পেতে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, অন্যের উঁচু জমি ও বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভূঞাপুর-তারাকান্দি-টাঙ্গাইল সড়ক লিকেজ হয়ে কমপক্ষে ১০ পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। সড়কের লিকেজ বন্ধ করতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে কাজ করছে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে যেকোন সময় সড়কটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
ভূঞাপুর ও গোপালপুর উপজেলা প্রশাসনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড পয়েন্টগুলোর লিকেজ বন্ধ করতে বালি ও বালুভর্তি বস্তা দিয়ে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করছে। যমুনার পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি ও লিকেজগুলো বড় আকার ধারণ করলে যে কোনো মুহূর্তে সড়কটি ভেঙে যেতে পারে। এতে তারাকান্দির সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গসহ টাঙ্গাইল জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, তারাকান্দি-গোপালপুর-ভূঞাপুর-টাঙ্গাইল সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে লিকেজ দেখা দিয়েছে। সেগুলো বন্ধ করতে ওই সড়কের ১০টি পয়েন্টে কাজ চলমান রয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বালির বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষার কাজ করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১৭ আগস্ট, ২০১৭/ফারজানা