শিরোনাম
২০ আগস্ট, ২০১৭ ১৯:৩৬

নলডাঙ্গায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

নাটোর প্রতিনিধি

নলডাঙ্গায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

ফাইল ছবি

অবিরাম ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বারনই নদীর পানি ও হালতি বিলের বন্যার পানি আরও অবনতি হয়েছে। রবিবার ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে ২২টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

হালতি বিলে তলিয়ে গেছে ৭০০ হেক্টর আমন ধান। ভেসে গেছে ৬০টি পুকুরের মাছ। এছাড়া আরও কয়েক শতাধিক পুকুরের বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকার কয়েক শতাধিক পরিবার রবিবার বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র। 

উপজেলার বাঁশিলার পূর্বপাড়া, দক্ষিণপাড়া, বিলজোয়ানী, ভূষনগাছা, তেঘরিয়া, সোনাপাতিল, ব্রক্ষপুর, ইয়ারপুর, মাধনগরের জোয়ানপুর, ভট্রপাড়া, খাজুরার বিভিন্ন এলাকার কয়েক শতাধিক পরিবারের বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বাড়িঘর ছেড়ে অসহায় পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সোনপাতিলা গ্রামের নদীপারের নয়ন ও গোবিন্দের মাটির কাাঁচা বাড়ির দেয়াল ধসে পরে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে মানুষ। 

তেঘরিয় গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার মত নরুল ইসলাম, আলামিন মোর্শেদের বাড়িঘরে হাটুপানি জমায় আমরা আসবারপত্র, গরু-ছাগল নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। তারা অভিযোগ করেন- এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বাঙ্গালখলসি, হলুদঘর, ইয়ারপুর, একডালা, গোপালবাটি, গোয়ালঘাট, বামনগ্রাম, কচকড়ি, ভট্রপাড়া, পিপরুল, খাজুরা, বিলজোয়ানী, ভূষণগাছা, আচঁড়াখালি, দিঘীরপাড়, শেখপাড়া, করেরগ্রাম ও পাটুল মিলে মোট ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা ইয়াসমিন। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইব্রাহিম হামিদ শাহিন জানান, এখন পর্যন্ত পাটুল, খাজুরা, মাধনগরে অন্তত ৬০টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। আরও শতাধিক পুকুর চাষিরা নেটজাল দিয়ে ঘিরে মাছ রক্ষা করার চেষ্টা করছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, গতদিন বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হালতি বিলসহ বিভিন্ন বিলে ৭০০ হেক্টর আমন ধান তলিয়ে গেছে। আর নিচু এলাকায় লাগানো বেগুন, পেঁপে সবজিক্ষেত ডুবে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজা হাসান জানান, বন্যা দুর্গতদের জন্য দুটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ত্রাণের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রতিদিন গড়ে বারনই নদীর পানি ও হালতি বিলের পানি দশমিক ৬-৭ সেন্টিমিটার হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রবিবার সকাল ১১টায় বারনই নদীর পানি ১৩.৩৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী রক্ষা কয়েকটি স্থানে বাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। ঝুকিপূর্ণ বাঁধ রক্ষা করতে সার্বক্ষণিক কাজ চলছে। 

বিডি প্রতিদিন/২০ আগস্ট ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর