শিরোনাম
২১ আগস্ট, ২০১৭ ১৭:১৬
পাহাড় ধসের প্রায় ৩ মাস পর

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারি যান চলাচল শুরু

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারি যান চলাচল শুরু

পাহাড় ধসের প্রায় তিন মাস পর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে শুরু হয়েছে ভারি যান চলাচল। সোমবার সকালে ১১টায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সাপছড়ি শালবনে সড়কের বিধ্বস্ত অংশে নবনির্মিত বেইলি ব্রিজটি ভারি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয় রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন।এসময় রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আবু মোছা ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল উপস্থিত ছিলেন। 

বেইলি ব্রিজের উপর প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে হালকা গাড়ি চালিয়ে উদ্বোধন করা হয়। পরে শুরু হয় রাঙামাটি ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার দূর পাল্লার সব ধরনের মাঝারি ও ভারি যানবাহন চালাচল। এসময় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন রাঙামাটি বাস ও ট্রাক মালিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা। 

এর আগে বেইলি ব্রিজ উদ্বোধনে খবর পেয়ে রাঙামাটি শহর থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সবার চোখে দেখা দেয় আনন্দ উল্লাস। খুশিতে ফেটে পড়ে সাধারণ গাড়ি চালকরাও।

রাঙামাটি বাস ও ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোঈন উদ্দীন সেলিম জানান, দীর্ঘদিন পর পাহাড়ের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বেইলি ব্রিজটি খুলে দেওয়ার কারণে দুর্ভোগ কমছে। পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি শহর থেকে সাবছড়ি শালবন বিহার সড়কে এতদিন পর্যন্ত সরাসরি বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ ছিল। 

যাত্রীদের রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় যেতে অটোরিক্সা যোগে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তারপর ঘাগড়া বাজার থেকে বাসে উঠতে হতো। একই সাথে সমান দুর্ভোগে পড়েতে হয়েছিল মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদেরও। পর্যটক পর্যন্ত আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাঙামাটিতে। এক প্রকার পাহাড়বন্দি হয়ে পড়েছিল রাঙামাটির মানুষ। দেখা দেয় দুর্ভোগ ও অভাব অনাটন। এখন বড় ও ভারি যান চলাচলের কারণে রাঙামাটি আগের মত আবারও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আবু মোছা জানান, গত ১৩ জুন পাহাড় ধসে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবাগানে ১০০ মিটারব্যাপী রাস্তা ধসে ১০০ ফুট খাদে বিলীন হয়েছিল। সড়কটির মোট ৪৫ স্থানে পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত হয়। এসময় রাঙামাটির সাথে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। 

তবে পাহাড় ধসের আট দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল রাতদিন শ্রম দেয়। এরপর ২১ জুন থেকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কটি হালকা যান চলাচল জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সড়কে উপর এক টনের অধিক ভারি যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। তাই ভারি যান চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার হিসেবে এ সড়কের বিধ্বস্ত অংশে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বেইলি ব্রিজ। 

তবে এ বেইলি ব্রিজটি স্থায়িত্ব ১০ বছর। চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য পাহাড় কেটে বিকল্প সড়ক তৈরি করতে হবে বলে জানান সওজের এ কর্মকর্তা।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানান, জনদুর্ভোগ কমাতে আসন্ন ঈদ-উদুল আযহাকে সামনে রেখে এ ব্রিজের উপর ভারি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। ব্রিজটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে মহাসড়কের বড় ও ভারি যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারে। 

তবে রাঙামাটির অন্যান্য সড়কগুলোর অবস্থা তেমন ভালো না হওয়ার কারণে এ মুহূর্তে ১০ থেকে ১৬ টনের অধিক ভারি যান চলাচল করা যাবে না। তবে ধরে ধরে এ ব্রিজের ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। সড়কগুলো মেরামত হয়ে গেলে সব ধরনের যান চলাচল করতে পারবে। 

প্রসঙ্গত, পাহাড় ধসে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কসহ জেলার মূল ৬টি সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জেলার এসব সড়কের ১৪৫ স্থানে ও ৭৯ স্পটে ধসের ঘটনা ঘটে।

বিডি প্রতিদিন/২১ আগস্ট ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর