১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৯:১৯

বগুড়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং, জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং, জনজীবন বিপর্যস্ত

বগুড়ায় প্রচণ্ড গরম আর ভয়াবহ লোডশেডিং-এ নাকাল মানুষ। শহর কিংবা গ্রাম সমানতালে চলছে লোশেডিং। বগুড়া শহরে দিনে দুই থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। আর গ্রামে চলছে ৪ ঘণ্টা। শহরের চেয়ে গ্রামের অবস্থা আরও নাজুক। কখনো কখনো এই লোডশেডিং ৫ ঘণ্টার বেশি দেখা যায়। ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন অসহনীয় হয়ে উঠছে। মিল কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আসন্ন দুর্গাপূজা ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি পরীক্ষাকে ঘিরে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বগুড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে প্রচণ্ড গরমে হাসফাস করছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকায় পরিবারের ছোট শিশুরা হয়ে যাচ্ছে অসুস্থ। জেলা শহরের বড়গোলা, ঠনঠনিয়া, সাতমাথা, বাদুড়তলা, মালতিনগর, চেলোপাড়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। আসন্ন দুর্গা পূজাকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে বিদ্যুৎ এর চাহিদা থাকলেও তা মিলছে না। বগুড়া বিসিক-এ বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে উৎপান কমতে শুরু করেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা বসে থাকায় কারখানা মালিকদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। চাহিদা মত বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণেই বগুড়ায় লোডশেডিং চলছে। অথচ বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে শহরের চেয়ে গ্রামের অবস্থা বেশি ভাল। 

বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, পল্লী বিদ্যুৎ সহ জেলায় মোট বিদ্যুৎ এর চাহিদা ২৩০ মেগাওয়াট। সেখানে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ১৫১ মেগাওয়াট। ফলে বিদ্যুৎ এর লোড শেডিং ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। 

বগুড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ (১) সুত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় বগুড়া পিডিপি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মোট চাহিদা প্রায় ৯০ মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদামত এই বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বগুড়ার গ্রাহকরা। চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ মিলছে মাত্র ৭০ থেকে ৭৫ মেগাওয়াট। কখনো কখনো চাহিদার মাত্রা ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াটও পেয়ে থাকে। 

বগুড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ- ১ ও ২ এর দায়িত্বপ্রপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগের তিনটি ডিভিশন। এর মধ্যে ডিভিশন-১ এর বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে ২৪ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ মেগাওয়াট। ডিভিশন-২ এর বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে ২৬ মেগাওয়াট। পাওয়া যাচ্ছে ১৯ মেগাওয়াট। 

বগুড়া সদরের কাজী নুরইল গ্রামের আহসান জানান, দিনে ৩ থেকে ৪ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রতিবারই এ ঘণ্টার নিচে বিদ্যুৎ আসে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যা রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে শিশু ও নারীদের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। এখন বগুড়ায় কোন সেচ কাজ না থাকলেও বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং রয়েছেই। 

বগুড়া বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে সময় মত কাজ করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, ঈদের পর থেকে নিয়ম করে প্রতিদিন ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। 

বিডি-প্রতিদিন/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর