২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ২১:৩৯

‘যেখানেই মানবিক বিপর্যয়, সেখানেই ছাত্রলীগ’

নিজস্ব প্রতিবেদক


‘যেখানেই মানবিক বিপর্যয়, সেখানেই ছাত্রলীগ’

নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সামগ্রী, পানি ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মনিটরিং সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কক্সাবাজার জেলার উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার কতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের মাঝখানে টিভি স্টেশনে কাছেই এই মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। 

এখান থেকে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, খাদ্য সরবরাহ, স্যানিটেশন ব্যবহারে উদ্বৃদ্ধকরণ, ব্যক্তি উদ্যোগ বা দলীয়ভাবে যারা ত্রাণ বিতরণ করবেন তারা চাইলে ছাত্রলীগ সার্বিক সহায়তা দেবে। শুক্রবার এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। পরে এই মনিটরিং সেল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। 

সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলের ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর, স্থানীয় এমপি আবদুর রহমান বদি, আশিকুলসহ রফিক এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ। 

পরিদর্শনকালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, "শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। স্থান ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের উদারতা ও মহানুভবতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্ব আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার প্রশংসা করছেন। তার নির্দেশে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িয়েছে।" মনিটরিং সেল খোলার জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানান তিনি। 

ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে। একজন রোহিঙ্গাও না খেয়ে মারা যাবে না। আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ রোহিঙ্গাদের পাশে আছে। 

ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, প্রতিষ্ঠাতার পর থেকে ছাত্রলীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করতো। এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যান গাড হিসেবে কাজ করে। নেত্রীর নির্দেশে দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রলীগ রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে। ছাত্রলীগ শুধু ছাত্র সংগঠনই নয়, এটা মানবিক সংগঠনও। 

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন বলেন, সময়ের প্রয়োজনে ছাত্রলীগকে দেশবাসী পাশে। আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগ যেমন ভূমিকা রাখে, তেমনি মানবিক বিপর্যয় দেখা দিলেও ছাত্রলীগকে পাওয়া যায়। তার ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে রাতদিন কাজ করে চলছে।
 
সংগঠনের এ উদ্যোগ সম্পর্কে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট থেকে আসা ত্রাণসামগ্রী আরো সুষ্ঠুভাবে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণের জন্য ‘মনিটরিং সেল’ গঠন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ ত্রাণ দিতে চাইলে এই সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহজে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে পারবে। এছাড়া অসুস্থদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। যেখানে নারী ও পুরুষ ডাক্তারের দু’টি আলাদা টিম কাজ করছে। প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধও দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। 

এস এম জাকির হোসাইন আরও বলেন, যেখানেই মানবিক বিপর্যয় সেখানেই ছাত্রলীগ। শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তিনি বলেন, যে ভরসা নিয়ে সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গারা বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ছুটে এসেছে, আমরা সেটা নিশ্চিত করব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের পাশে থাকবে বলেও জানান জাকির হোসাইন।
  
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয় বলেন, ত্রাণ বিতরণ, রোহিঙ্গাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেয়া, নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও স্থানীয় পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা জেলা ছাত্রলীগ শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে। যতদিন এদের স্থায়ী সমস্যা সমাধান না হবে ততদিন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে যা যা করা দরকার তাই করবো।  
 
এ সময় ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল ইসলাম তানিম উপস্থিত ছিলেন।  
  

বিডি-প্রতিদিন/ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ তাফসীর ‌

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর