২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:১৭

সিংড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সুতি জাল আটক

নাটোর প্রতিনিধি:

সিংড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সুতি জাল আটক

নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের জোলারবাতা ও আত্রাই নদীর কালিনগর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি সুতি জাল ও অবৈধ কারেন্ট জাল উচ্ছেদ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ মাহমুদের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে রাতেই জালগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়।

এছাড়া গত ১ মাসে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এর আওতায় ২৬টি মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ১০টি সুতি, ২০টি বাদাই ও ৮শ' মিটার কারেন্ট জাল এবং ২০টি বাঁশের বেড়া উচ্ছেদ করে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। 

সিংড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ওমর আলী জানান, চলনবিলের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গত ১৮ আগষ্ট থেকে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য দপ্তর আত্রাই, গুড় ও বাড়নই নদী এবং চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় দিবা-রাত্রি একযোগে ২৬টি মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে এ পর্যন্ত ২০টি সুতি জালের বাঁশের বেড়া অপসারণ, ১০টি সুতি জাল, ২০টি বাদাই জাল ও ৮শ' মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল আটক করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। 

অভিযানে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে সুতি জাল মালিকদের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩ জন অপরাধীকে ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় সিংড়া উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বিলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া নদ-নদী ও খাল বিল দিয়ে অতি সহজেই পানি নেমে যাওয়ার জন্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অবৈধভাবে বসানো সুতি ও বাঁদাইজালসহ বাঁশের বেড়া উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পর উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মৎস্য বিভাগ নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে সকল প্রতিবন্ধকসহ নিষিদ্ধ সুতি জাল ও বাঁশের বেড়া উচ্ছেদ অভিযানের গতি আরো বৃদ্ধি পায়। 

এই অভিযানে বাধা প্রদানের অভিযোগে গত ২১ আগস্ট সিংড়ার ৪নং কলম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মইনুল হক চুনুকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে। পরে তিনি ১৫ দিন কারাবাসের পর আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পান। এসব অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সহ পুলিশ সদস্য এবং বেশ বিপুল সংখ্যক শ্রমিক অংশ নেন।
 
প্রশাসনের এই অভিযানকে অভিনন্দন জানিয়ে চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, বাঁশের বেড়া দিয়ে ও অবৈধ সুতি জালের ফাঁদ পেতে চলনবিল ও আত্রাই নদী থেকে অবাধে মাছ শিকার চলছে। এতে মাছের পাশাপাশি কাঁকড়া, শামুকসহ নানা জলজ প্রাণী আটকা পড়ছে। ফলে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসম্য নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে চলনবিলে কর্মসূচির পালন করা হবে বলে জানান তিনি।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ মাহমুদ জানান, চলনবিলের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর একযোগে কাজ করছে। আর এই ধারাবাহিক অভিযানে একশ্রেণির সুবিধাভোগীদের হাত থেকে মাছ রক্ষা করার ফলে চলনবিলের ক্ষুদ্র জেলেরা অল্প পুঁজি খাটিয়ে মাছ বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে।


বিডি প্রতিদিন/২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর