২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৮:২৭

মধ্যপাড়া খনিতে আবারও পাথর উত্তোলন বন্ধ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

মধ্যপাড়া খনিতে আবারও পাথর উত্তোলন বন্ধ

উৎপাদন শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় আবারও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পের। শনিবার সকালে খনিটির প্রকল্প পরিচালকের অসহযোগীতার অভিযোগ তুলে খনির প্রধান ফটকে নোটিশ টানিয়ে প্রকল্প পরিচালকের অপসারণের দাবিতে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি।

জিটিসি বলছেন, চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প পরিচালকের অসহযোগীতার কারণে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না, তাই বাধ্য হয়ে সকল কার্যক্রম বন্ধ করেছে জিটিসির রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, হঠাৎ করে খনিটির সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে খনিতে কর্মরত সাড়ে আটশ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া খনিটির উৎপাদন বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকার লোকসান হবে সরকারের।

জিটিসি'র অভিযোগ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই পর্যন্ত পেট্রোবাংলা ও মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের নিকট ছয় বার আবেদন করেও কোনো সাড়া মিলেনি। 

জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মঞ্জুরুল কাদিরের নেতৃত্বে চার সদস্যর একটি কমিটি গঠন হয়েছে, কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশরী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদ, মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ খান ও পেট্রোবাংলার একজন মহাব্যবস্থাপক।

জিটিসি সূত্র জানায়, চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য নিয়োজিত মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানি লিমিডেটের (এমজিএমসিএল) প্রকল্প পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার টু কন্ট্রাক্ট) মীর আব্দুল হান্নান মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) দায়িত্বহীনভাবে খনি পরিচালনার কাজে প্রয়োজনীয় অতি জরুরি কাগজপত্র ও খনি উন্নয়নের কাজে প্রয়োজনীয় নতুন যন্ত্রপাতি আমদানি করার অনুমোদন প্রক্রিয়া, বছরের পর বছর ধরে আটকে রেখে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসিকে খনি পরিচালনা করতে দেয়নি। যার ফলস্বরূপ খনিটির কার্যক্রম দুই বছর পর্যন্ত বন্ধ থাকে। জিটিসি বলেন, এর পরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে খনিজ যন্ত্রপাতি আমদানি করে মাত্র ১০ মাসের ব্যবধানে খনি থেকে পাথর উত্তোলন শুরু করে। 

এদিকে, মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহব্যবস্থাপক (অপারেশন) ও প্রকল্প পরিচালক মীর আব্দুল হান্নান বলেন, খনিটি পরিচালিত হয় খনির পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে। এখানে আমার একার কিছু করার নেই। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেন আমাকে দায়ী করছেন? তা আমার জানা নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই বরং তাদের শর্ত ভঙ্গ করেছে।

মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ খান বলেন, মধ্যপাড়া পাথর খনি এর আগে বন্ধ ছিল কি কারণে এসব নিয়ে সার্বিক বিষয় জানতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পটিতে উৎপাদন যন্ত্রের অভাবে গত ২০১৫ সালে পাথর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, এরপর দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকার পর চলতি মাস থেকে পাথর উৎপাদন শুরু হয়। পাথর উৎপাদন শুরু হওয়ার পর শনিবার থেকে আবারও পাথর উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হল।

মধ্যপাড়া পাথরখনি গেটের সামনে নোটিশে বলা হয়েছে, মীর মোঃ আব্দুল হান্নানকে মধ্যপাড়া খনি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম হতে অপসারণ না করা পর্যন্ত ২৩ সেপ্টেম্বর পর জিটিসি সকল প্রকার খনির কাজ থেকে বিরত থাকবে এবং এই অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ে খনির সকল শ্রমিককে খনির কাজে নিয়োজিত করা সম্ভব হবে না। কিন্তু খনির জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শ্রমিকরা ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নির্ধারিত ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী কাজে যোগ দিতে নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর