১৮ অক্টোবর, ২০১৭ ১৬:২০

শিক্ষিকা নিয়োগে ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

শিক্ষিকা নিয়োগে ৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে

ভুয়া নিয়োগ পরীক্ষা ও নিয়োগপত্র দিয়ে এক শিক্ষিকার কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পশ্চিম বামনগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও জামায়াত নেতা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ছয়মাস বিনাবেতনে চাকরির পর মাদ্রাসা থেকে শুন্য হাতে বের করে দিয়ে অন্য আরেকজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভিটেমাটি বিক্রি করে দেয়া ৮ লক্ষ টাকা-চাকরি ফেরতের জন্য মামলা করায় ওই জামায়াত নেতা নানাভাবে শিক্ষিকাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। 

শিক্ষিকা আঞ্জুয়ারা পারভীন জানান, বামনগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার জুনিয়র মৌলভী পদে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বলে তার স্বামী কামরুজ্জামানের কাছে মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম প্রস্তাব দেয়। এ জন্য ৮লক্ষ টাকা দাবী করে। চাকুরী পাবার আশায় ভিটেমাটি বিক্রি করে সুপার রেজাউল করিম ও সহকারী সুপার মোয়াজ্জেম আলীকে ৮লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর মাদ্রাসার প্যাডে তাকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। ওই বছরের ১৬ নভেম্বর মাদ্রাসায় জুনিয়র মৌলভী পদে যোগদান করে ছয়মাস নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চাকুরী করি। এই সময়ের মধ্যে বেতনের চাপ দিলে আজকাল করে কালক্ষেপন করে। ছয়মাস পর সুপার রেজাউল করিম জানায় তোমার নিয়োগে ঝামেলা আছে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা দিতে হবে। পুনরায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার নাটক সাজিয়ে মাদ্রাসা সুপার আমাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে ১১ লক্ষ টাকার ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দেন। আমাকে বিনাবেতনে এবং ৮লক্ষ টাকা ফেরত না দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি বারবার বলা সত্ত্বেও কর্ণপাত করে না। এ অবস্থায় ৮লক্ষ টাকা ও চাকুরী ফেরত না করায় আমার স্বামী কামরুজ্জামান বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই আমাকে এবং আমার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। 

শিক্ষিকার দেবর বকুল আহমেদ জানান, টাকা দিয়ে চাকুরী নেয়ার ৬ মাস পর তাকে বের করে দেয়া হয়। বর্তমানে ভাবীর চাকুরীর বয়সও শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চাকুরী ফেরত না পেলে পরিবারটি পথে বসে পড়বে। 

স্থানীয় বাসিন্দা রেজা আহমেদ ও সাইফুল ইসলাম জানান, মাদ্রসা সুপার রেজাউল করিম একজন দুর্নীতিবাজ ও চতুর লোক। বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিল করে সুন্দর সুন্দর কথা বলায় সরল বিশ্বাসে টাকা দেয়ার পর নিয়োগপত্র দেয়। কিন্তু ছয়মাস পর জানতে পারি নিয়োগপত্রটি ভুয়া। তারা আরো জানায়, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ইতোপুর্বে ম্যানেজিং কমিটি টাউট রেজাউল করিমকে বহিস্কার করেছিল। দুর্নীতি করে লক্ষলক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কয়ড়া এলাকায় আলীশান বসতবাড়ীও ঘরে তুলেছে। 

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার রেজাউল করিম হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সাত লক্ষ টাকার নেয়ার পর সাময়িক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য অন্য একজনকে সুপারিশ করেন এবং সাতলক্ষ টাকা দেয়ায় তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর ওই শিক্ষিকার টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। আদালত যে নির্দেশনা দিবেন সে মোতাবেক আমরা কাজ করব। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর