২০ অক্টোবর, ২০১৭ ২২:২০

নির্মাণের দুই মাসেই বেড়িবাঁধে ধস, কলাপাড়ায় ১১ গ্রাম প্লাবিত

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

নির্মাণের দুই মাসেই বেড়িবাঁধে ধস, কলাপাড়ায় ১১ গ্রাম প্লাবিত

নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দুই মাসের মাথায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লালুয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ধসে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে  ৪৭/৫ নং পেল্ডারের বেড়িবাঁধের ৮ টি পয়েন্ট ধসে যায়। এর ফলে ওই ইউনিয়নের তিন হাজার একর ফসলী জমিসহ ঘর-বাড়ি পনির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুর ও ঘেরের মাছ। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১১টি গ্রামে দুই হাজার মানুষ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, বেড়িবাঁধে নিম্নমানের কাজ করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এদিকে উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চর ধুলাসরের বেড়িবাঁধের একটি পয়েন্টে ভেঙে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গ্রামবাসীসহ জনপ্রতিনিধির আশংকা করেছেন রাতের জোয়ারে বাকি অংশটুকু বিলীন হতে পরে। এছাড়া মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জেয়ারের পানি প্রবেশ করে পাঁচটি গ্রামে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসারের রামনাদ মোহনা কোলঘেষে লালুয়া ইউনিয়নটি অবস্থিত। এলাকার মানুষের দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য পনি উন্নয়ন বোর্ড চলতি অর্থ বছরে জরুরিভাবে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ বাঁধটি নির্মাণ করে। কিন্তু দুই মাসের মাথায় রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে এ বাঁধটি ফের বিধ্বস্ত হয়। এতে ওই ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া, চারিপাড়া, নাওয়াপাড়া, গাজীরখাল, মুন্সিপাড়া, বানাতিপাড়া, ১১নং হাওলা, ধঞ্জুপাড়া, ছোট পাচ নং, বড় পাঁচ নং, চৌধুরীপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

পানিবন্দী ওইসব গ্রামের মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। রাস্তাঘাট, বসত বাড়ি ও আবাদি জমি পানিতে একাকার হওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পরেছে। একমাত্র ফসল ধানের উপর নির্ভরশীল কৃষকরা ফসল হারানোর ভয়ে এখন শংকিত হয়ে পরেছেন। 

বানাতী পাড়া গ্রামে ষাটউর্ধে সশিলা বেগম বলেন, 'রাইতে ঘুমাইতে পারি নাই। নাতি ডারে কোলে লইয়া চকিতে বইয়া রইছি। ঘরের মধ্যে পানি উইড্যা তলাইয়া রইছে। '

ওই গ্রামের গৃহবধূ রুমা জানায়, সকালে জোয়ারের পানিতে রান্নার চুলা ভাইস্যা গেছে। দুপুরে রান্না হয় নায়। ছেলে মেয়েরা না খেয়ে আছে। বাড়ি থেকে বেড় হওযার কোন উপায় নেই। জোয়ারের পানিতে রাস্তা ঘাট তলিয়ে রয়েছে। 

লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চোয়ারম্যান মীর তারেকুজ্জামান তারা জানান, রাতে রাবনাবাধ নদীর আস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে ৪৭/৫ নং পেল্ডারের বেড়িবাঁধের ৮টি পয়েন্ট ভাঙ্গন দেখা দেয়। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানোর জন্য বারবার ফোন করেছি। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তবে এ বাঁধটি ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজ করায় এমন দশা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।  

 

বিডি প্রতিদিন/২০ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর