২১ অক্টোবর, ২০১৭ ২০:০৭

কলাপাড়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৩০টি গ্রামের মানুষ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

কলাপাড়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৩০টি গ্রামের মানুষ

জোয়ারের পানিতে ভাসছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গ্রামের পর গ্রাম। নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ থেমে থেমে মাঝাড়ি থেকে ভারি ও অতি ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর ও নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। 

গতকাল শুক্রবার থেকে এ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টের বেরি বাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লালুয়া, মহিপুর,ধানখালী ও চাম্পাপুর ইউনিয়নের ৩০ টি গ্রামের মানুষ। দু’দফা জোয়ারের পনিতে গিলে খাচ্ছে ওইসব গ্রামের মানুষের বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়টুকু। 

গত কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ার পানি প্রবেশ করে কয়েক হাজার বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ। ওইসব গ্রামের কয়েক হাজার একর আমন ক্ষেত জোয়ারের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে রয়েছে। চরম দুর্ভোগে পরে পানিবন্দি মানুষ। অধিকাংশ মানুষ এখন অনেকটাই জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাবনাবাধ নদীর তান্ডবে শুক্রবার রাতে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ৪৭/৫ নং পোল্ডারের  ৮ পয়েন্টের বেরিবাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৩ হাজার একর আমন ক্ষেত তলিয়ে রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২ হাজার পরিবার। 

শনিবার সকালে ধানখালী ও চাম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর ও গন্ডামারি দু’টি পয়েন্টের বেরিবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে সাগর মোহনার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, কোমরপুর ও সুদিরপুর বেরিবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ৭ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে ওইসব গ্রামের অন্তত দেড় হাজার একর ফসলী জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি ওইসব গ্রামের অন্তত ৫ হাজার পরিবার রান্না বন্ধ রয়েছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে দু’দিন ধরে অভূক্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

এদিকে কলাপাড়া থানা ওসি আলাউদ্দিন শনিবার দুপুর থেকে বানভাসি মানুষের দুঃখ দুর্দশা সরেজমিনে পরিদর্শ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ওইসব মানুষষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরন করেছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ফসলী জমি, পুকুর, ঘেরসহ বাড়ি ঘর তলিয়ে গেছে। ওইসব বানভাসি দেড় সহস্রাধিক পরিবারের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অস্বাভাবিক  স্রোতের টানে মানুষ ভেসে বেড়ালেও তাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের চরম সংকট। 

উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবুল খাঁয়ের জানান, এলাকা পরিদর্শন করে তারা ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাঠাবেন। আশাকরি বর্ষা মৌসুম শেষে এই ভাঙ্গা বাঁধগুলো মেরামত করতে পারব। কারন বর্ষায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করলে আবার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। 

এদিকে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তানভির রহমান জানান, কলাপাড়া থানা ওসি আলাউদ্দিন শনিবার দুপুর থেকে বানভাসি মানুষের দূ:খ দুর্দশা সরেজমিনে পরিদর্শ করেছে। পাশাপাশি ওইসব মানুষষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরন করেছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।


বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর