২৩ অক্টোবর, ২০১৭ ১৩:৩৩

পুনর্ভবা নদীতে ব্রিজ নেই, পারাপারে নৌকাই ভরসা

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

পুনর্ভবা নদীতে ব্রিজ নেই, পারাপারে নৌকাই ভরসা

দিনাজপুর জেলার দুটি উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা নদীর দুই তীরের কয়েকটি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র বাহন নৌকা। দিনাজপুর সদরের দক্ষিণের সাথে বিরলের কয়েকটি গ্রামের মাঝে পুনর্ভবা নদী বয়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনগণের নৌকাই ভরসা। অসুস্থ রোগীকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে ওইসব এলাকার জনগণকে ঘুরে পাড়ি দিতে হয় ২০ কিলোমিটারের বেশি পথ। অথচ নদী পেরিয়ে ৮ কিলোমিটার পাড়ি দিলেই দিনাজপুর শহরের হাসপাতালসহ সবকিছু। 

দিনাজপুর সদরের আউলিয়াপুর ইউপির সাথে বিজোড়া ইউপির দুলালিগঞ্জ ঘাট, সদরের  আউলিয়াপুর ইউপির সাথে বিরলের পলাশবাড়ী ইউপির সাকাইর ঘাট, সদরের সুন্দরার সাথে বিরলের কান্দেকপুর ঘাট। এ তিনটি ঘাট দিয়ে নৌকায় চলাচল করে সাধারণ মানুষ। এসব ঘাট দিয়ে প্রতিদিন নিয়মিত প্রায় কয়েক হাজার মানুষ বিরলের বিজোড়া ও পলাশবাড়ি ইউনিয়ন থেকে দিনাজপুর জেলা সদরে যাতায়াত করে। 
একটি ব্রিজের অভাবে এ অঞ্চলটি অবহেলিত হয়ে আছে। ব্রিজের জন্য এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসলেও কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। 

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানায়, নদীর এপারে বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়ন অপর পারে দিনাজপুর জেলা সদর। মাঝখানে পূনর্ভবা নদী। ওপারের বিরল উপজেলা সদরের চেয়েও কাছাকাছি সদর উপজেলার একমাত্র বিসিক শিল্পনগরী ছাড়াও  ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ, চেরাডাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয়, কেবিএম কলেজ, ঘুঘুডাঙ্গা স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই মানুষ নদীপথেই যাতাযাত করে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনে, চাকরি কিংবা কৃষকের উৎপাদিত ফসল কম সময়ের মধ্যে ওই নদীর ঘাট দিয়ে জেলা সদরের আনা সহজ হয়।

বিরলের বসন্তপুর গ্রামের পয়তাল্লিশ বছর বয়সী কৃষক মোকাররম হোসেন জানান, 'মোর ছওয়ালক ঘুঘুডাঙ্গা স্কুলত ভর্তি করবা চাহিছুনু কিন্তু নৌকাত পারাপার হবার সময় পানি (বৃষ্টি) হইলে যাওয়া আইসাতে বই-খাতা ভিজে যায়। এই জন্যে ঐপাড়ত ভর্তি করবা পারো নাই। 'তাই ১০ বছর বয়সী তার সন্তান নদী পারের স্কুল বাদ দিয়ে বাধ্য হয়ে কয়েক কিলোমিটার দুরে বিরলের সাকাইর প্রাইমারী স্কুলে যায়। 

পলাশবাড়ি এলাকার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ছোট বাচ্চারা নৌকায় পারাপার হতে না পারার কারণে অনেকেই স্কুলেই যায়না। 

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এ এলাকায় একটি ব্রিজ হলে কৃষি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সবক্ষেত্রে অবহেলিত নদীপারের জনগণের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটবে। 

সাকাইর ঘাটের নৌকার মাঝি বিরলের বসন্তপুরের জুয়েল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তার এই ঘাট দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়। নদীতে পানি কমে এলে নৌকার ঘাটে অস্থায়ী বাঁশের সাকো তৈরি করা হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি এ এলাকায় একটি ব্রিজ তৈরির। 

এ ব্যাপারে আউলিয়াপুর ইউপি সচিব আজিজার রহমানসহ ইউপির অনেক সদস্যই জানান, এ এলাকায় একটি ব্রিজ হলে এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। 


বিডি প্রতিদিন/২৩ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর