২৪ অক্টোবর, ২০১৭ ১৩:১৪

টাঙ্গাইলে ফোয়াদ হত্যা; ১৬ জনকে আসামি করে মামলা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলে ফোয়াদ হত্যা; ১৬ জনকে আসামি করে মামলা

টাঙ্গাইল শহরের রেজিষ্ট্রিপাড়া শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের ছাদ থেকে পড়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ফোয়াদ নিহত হওয়ার ঘটনার জট খুলছে না। সিসিটিভির ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদে চলছে ঘটনার তদন্ত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। তবে পরিবারের দাবি ফোয়াদকে হত্যা করা হয়েছে। সে অভিযোগ আমলে নেয়নি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ। তাই গত ২৩ অক্টোবর নিহতের চাচা ইস্রাফিল হোসেন কামাল বাদী হয়ে টাঙ্গাইল আদালতে ১৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

টাঙ্গাইল শহরের রেজিষ্ট্রিপাড়া শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের আবাসিক ভবনের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ফোয়াদের মৃত্যু হয় ১৬ অক্টোবর দুপুরে। আবাসিক ভবনের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ঐদিন দুপুরে কয়েকজন ছাত্র আবাসিক ভবনের নিচে দাঁড়িয়েছিল। অপেক্ষমান ছাত্ররা চারতলার ছাদের দিকে ইশারা করে কিছু বলাবলি করছিল। এর কিছুক্ষনের মধ্যেই নিচে পড়ে ফোয়াদের দেহ। 

পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয় শিক্ষার্থীরা। টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফোয়াদকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ রেজিষ্ট্রিপাড়া শাখার পরিচালক আনোয়ার হোসেন আসলাম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। স্বজনদের দাবি ফোয়াদকে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত ফোয়াদের মা- রুবী আক্তার, চাচা- ইস্রাফিল হোসেন কামাল ও ফুপু- আয়শা আক্তার লাবনী টাঙ্গাইল মডেল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ আমলে নেয়নি। পরে নিহত ফোয়াদের চাচা মোঃ ইস্রাফিল হোসেন কামাল বাদী হয়ে ২৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম হত্যা মামলাটি আমলে নিয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানাকে এফআইআর করার আদেশ দেন। 

মামলার এজাহারে শাহীন স্কুলের পরিচালক ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আসলাম, আবাসিক শিক্ষক আব্দুর রশিদসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। 

অন্যান্য আসামিরা হলেন, শিক্ষক জামিল, সহপাঠি-উচ্ছাস, সিয়াম, নুসরাত, সামছুল আলম, মো. জনি, জামিল, রেজভী আহম্মেদ সাকিব, নাছির শেখ, মিরাজুল ইসলাম স্বপন, আলামিন, সাফায়েত, জাহিদ, কামরুল ও ফয়ছাল।

এ ব্যাপারে শাহীন স্কুলের পরিচালক ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আসলাম জানান, চারতলার ছাদ থেকে ছাত্র পড়ে গেছে, এটা একটি দুর্ঘটনা। আইনানুযায়ী যা হয় তাই হবে। আমি ঘটনা শুনার পরপরই দ্রুত ঐ ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। চিকিৎসার ক্রুটি করা হয়নি।

টাঙ্গাইল মডেল থানার ওসি . মো. সাইদুর রহমান বলেছেন, তদন্ত অব্যাহত আছে। নিদিষ্ট তথ্য প্রমান হাতে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

শাহীন শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান মাসুদুল আমিন শাহীন ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী আব্দুস সালাম পিন্টু মুক্তিপরিষদের আহবায়ক ছিলেন। শাহীন শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান মাসুদুল আমিন শাহীন বলেন, হত্যা মামলা করলে তো টাঙ্গাইলের পুলিশই মামলা তদন্ত করবেন? নোয়াখালী থেকে টাঙ্গাইল এসে হত্যা মামলা চালাবেন দেখা যাক! তিনি আরও বলেন, ফোয়াদ তার মায়ের উপর অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছে। স্কুলের পক্ষ থেকেও ফোয়াদের চাচা, ফুপু ও মায়ের বিরুদ্ধেও মামলা করার প্রস্ততি নেয়া হচ্ছে।

এদিকে ফোয়াদ হত্যা ঘটনার রহস্য উৎঘাটনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।

বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ অক্টোবর, ২০১৭/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর