২০ নভেম্বর, ২০১৭ ১৭:৩৮

লক্ষীপুরে এসএসসি’র ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ

লক্ষীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষীপুরে এসএসসি’র ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ

শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে লক্ষীপুরের পাঁচ উপজেলার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণের নামে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে বিদ্যালয়গুলোর লুকোচুরি খেলায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবকরা। কোন কোন ক্ষেত্রে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এদিকে ফরম পূরণ করতে না পারা বহু শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা সন্তানদের অনিশ্চিত শিক্ষা জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এসব বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

সরেজমিন লক্ষীপুরের কমলনগরের চর জাঙ্গালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সদর উপজেলার বাংগা খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়, লক্ষীপুর পৌর জনকল্যান একাডেমী ঘুরে দেখা গেছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ অবস্থায় অপেক্ষমান অভিবাবকরা। সোমবারও এসব বিদ্যালয়ে ভিড় দেখা গেছে।

তাদের অভিযোগ এ বিদ্যালয় গুলোতে এবার এসএসসি পরীক্ষার নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লুকোচুরি খেলছেন। ফলাফল প্রকাশ না করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফি এর চাইতে ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। যারা বাড়তি টাকা দিয়েছেন  তাদের ফরম পূরণ করানো হয়েছে। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ও রয়েছে। এছাড়া অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৪  হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, চর জাঙ্গালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৪৫ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন ২৬ জন।

কিন্তু ফলাফল প্রকাশ না করে অভিবাবকদের সঙ্গে অসদাচারণসহ স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বাড়তি টাকা নিয়ে আরো বেশী শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ  করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। একইভাবে বাংগা খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয় ৫০ জন, জনকল্যান একাডেমীতে ৭২ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৫৩ জন। এ দুটি বিদ্যালয়েও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বোর্ডের নিয়ম মেনেই ফরম পূরন করানো হয়েছে, বাড়তি টাকা নেয়া হয়নি জানিয়ে নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল বোর্ডে পাঠানো হয়েছে, এর বাইরে কাউকে ফরম পূরণ করানো সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান তারা।

এদিকে সদর উপজেলার টুমচর আসাদ একাডেমী, দালাল বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, রামগঞ্জ, রামগতিসহ জেলার প্রায় সব বিদ্যালয়ে এমন অবস্থা বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পুরণ না করাতে পেরে তাদের অনিশ্চিত শিক্ষা জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান ও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিক্ষার নামে বাণিজ্য বন্ধ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এদিকে জানতে চাইলে আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১৪৯০ ও বিজ্ঞান শাখার জন্য ১৫৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর বাইরে বাড়তি কোন টাকা নেয়া হলে সেটি বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য ও  নিয়ম বহির্ভূত কর্মকান্ড হবে। 

এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরিৎ কুমার চাকমা ফরম পূরণে ফি আদায়ের বিষয়টি জানাতে না পারলেও  শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনার বাইরে বাড়তি টাকা নিলে যথাবিহীত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

বিডিপ্রতিদিন/ ২০ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর