২০ নভেম্বর, ২০১৭ ২২:৪৩

দুর্যোগ সংকেতে জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় উপকূলবাসী

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া(পটুয়াখালী):

দুর্যোগ সংকেতে জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় উপকূলবাসী

প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের দশ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো স্থায়ীভাবে নির্মিত হয়নি উপকূলীয় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিধ্বস্ত বেরিবাধ। গড়ে ওঠেনি পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র। ফলে দুর্যোগ সংকেতে নিশ্চিত জীবনহানি, ফসলহানিসহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নিয়ে এসব এলাকার মানুষের সংগ্রামী জীবন-জীবিকা চলছে বছরের পর বছর। এমন অবস্থা দুর্যোগ ঝুঁকির মধ্যে থাকা সংগ্রামী মানুষগুলোর দাবি মজবুদ ও স্থায়ী বেরিবাধসহ পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের সিডরের পর এ দুর্যোগ সংকট হয়ে উঠে আরো তীব্র। এ সময় বেরিবাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে প্রাণহানি ছাড়াও নিখোঁজ হয় অনেকেই। নিখোঁজদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা আজও জানা নেই স্বজনহারা পরিবারগুলোর। এরপর আইলা, মহাসেনসহ প্রতি বছরই কমবেশি আঘাত হানছে ছোট-মাঝারী দুর্যোগ। এমন দুর্যোগ কম-বেশি ক্ষতি করেছে এসব জনপদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝড়-জ্বলোচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করে সমুদ্র উপকূলীয় এ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর বেঁচে আছেন। অনেক আগে থেকেই বিক্ষিপ্ত রাবনাবাদ, আঁন্ধারমানিক, বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর প্রচন্ড ঢেউ কেড়ে নিয়েছে অনেকের ফসলি জমি, ভিটা-বাড়ি,বাপ-দাদার কবর।

একাধিক এলাকাবাসী সাথে আলাপকালে তারা জানান, সিডর পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে বেরিবাধগুলো সংস্কার হলেও প্রতিবছর বর্ষায় আবার তা ভাঙ্গছে। অমাবস্যা, পুর্ণিমা কিংবা নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেই এ ভাঙ্গনের অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর, পুকুর-ঘের তলিয়ে যায়। বারবার এমন ক্ষতির মুখে এসব এলাকার কৃষক, দিনমজুর ও মাছধরা পেশায় নিয়োজিত হতদরিদ্র মানুষগুলো। এক সময় এসব জনপদে যেসব পরিবারের ছিল গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ, চাষের জমি তারা আজ সর্বস্বহারা। অনেকেই পেশা হারিয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে চলে গেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া সত্তরের দশকে নির্মিত মাটির কিল্লা অরক্ষিত,সংস্কারহীন রয়েছে। অনেকটাই পরিত্যাক্ত। অনেক কিল্লায় স্থায়ীভাবে ঘর বেঁধেছে কিছু পরিবার। ফলে জরুরী মুহুর্তে মাটির কিল্লায় যেতে পারছেন না দূর্যোগকবলিত মানুষগুলো। 

এ প্রসংগে পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, সত্তরের দশকে নির্মিত বিদ্যমান বেবিবাধগুলো নদী থেকে দূরে ছিল। সময়ের পরিক্রমায় নদীর তীব্র স্রোতে বেরিবাধের বাইরে সমতল ভূমি ভেঙ্গে নদী বাধের কাছে চলে এসেছে। জরুরি মেরামত করাতে গিয়ে সেখানেই বাঁধ তৈরি করতে হচ্ছে। সাথে রয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা। পূর্বের্নিমিত বাধ শক্ত এবং অঠালো মাটিতে ছিল। বর্তমানে যে মাটি পাওয়া যাচ্ছে, তা অঠালো নয়। আবার বেরিবাধের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।    

জেলা প্রশাসক ড.মাসুমুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকির কথা বিবেচনায় রেখে পর্যায়ক্রমে এবং দ্রুততম সময়ে সকল এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র র্নিমাণ করা হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর