২৩ নভেম্বর, ২০১৭ ১৫:৩১

ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে পদ্মাপাড়ের মানুষের

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর


ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে পদ্মাপাড়ের মানুষের

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা ডাকাত আতঙ্কে গত কয়েকদিন ধরে রাত জেগে পাহারা দিয়ে চলেছেন। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন উপজেলার অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ। উপাজেলা পদ্মা পারের বসতিরা প্রতিদিন রাত ১১টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত লাঠিসোটা, ঢাল সরকি নিয়ে দলবদ্ধভাবে পাহারা দিয়ে চলেছেন নিভৃত পল্লীর বিভিন্ন মেঠোপথ। এছাড়া টর্চ লাইটের ফ্লাসের আলোয় পদ্মার পাড় দেখতে দেখতে এবং হৈ হুল্লোল করে রাত কাটিয়ে দিচ্ছেন গ্রামবাসী। এসব পাহারাদারদের সহায়তা করে চলেছেন থানার টহল পুলিশ সদস্যরা। 

সম্প্রতি চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মাপাড়ের কয়েকটি ধনী পরিবারে দফায় দফায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হওয়ার পর এলাকায় চরম ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাকাতদল গভীর রাতে স্পিডবোট যোগে পদ্মাপারে এসে আকস্মিক লুটপাট, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে উধাও হয়ে চলেছে। গত এক মাসে পদ্মাপাড়ে ডাকাতির ঘটনায় অন্তত অর্ধকোটি টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুটপাট, তিনজন হত্যাসহ দুই যুবক পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তাই ডাকাত প্রতিরোধে রাত জেগে পাহারা দিয়ে চলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী। সর্বশেষ ডাকাতদের হাতে দুই গ্রামবাসী নিহত হবার পর রাত জেগে পাহারা বসানো হয়েছে।

স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, উপজেলার পদ্মা নদী ঘেঁষে গ্রামগুলো বেশী ঝুঁকিপূর্ণ থাকার কারণে নিয়মিত টহল দেয়া হচ্ছে। পদ্মাপাড়ের গ্রামগুলোর পাহারার জন্য অন্তত ১৫টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতি দলে ১০ জন করে পহারাদার রাখা হয়েছে। প্রত্যেক পাহারাদারের হাতে লাঠি, সরকিসহ দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। 

পদ্মারপাড় সংলগ্ন গ্রামগুলো হলো সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রাম, আ. গফুর মৃধার ডাঙ্গী গ্রাম, কামার ডাঙ্গী, খালাসী, ডাঙ্গী, বাদুল্যা মাতুব্বরের ডাঙ্গী, হাজী ডাঙ্গী, বালিয়া ডাঙ্গী, ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রাম। এছাড়া উপজেলার চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চরকল্যানপুর গ্রাম, দিয়ারা গোপালপুর গ্রাম, ধোনাই মৃধার ডাঙ্গী গ্রাম ও নুরে মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের রাত জেগে পাহারা দিয়ে চলেছেন এলাকাবাসী।

এসব পাহারাদারদের জন্য প্রায় রাতেই নৈশ ভোজের আয়োজন করছেন কামার ডাঙ্গী গ্রামের শাহজাহান মাস্টার। তিনি জানান, দু’রাত আগেও পদ্মা নদীতে ডাকাতদলের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্ত পাহারাদাররা চিৎকার করে ধাওয়া করার কারণে ডাকাতরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, রাত জেগে পাহারাদারদের সাহস ও শক্তি যুগিয়ে চলেছেন চরভদ্রাসন থানার টহল পুলিশের একটি দল। পুলিশ সদস্যরা গভীর রাতে দফায় দফায় গ্রামের পাহারাদারদের পরিদর্শন করে উৎসাহিত করছেন।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রামপ্রসাদ ভক্ত জানান, সম্প্রতি ডাকাতের হামলায় দু'জন নিহত হবার পর থেকে পুলিশের পাশাপাশি রাতের বেলা গ্রামবাসী গ্রামে গ্রামে পাহারা বসিয়েছে। এতে ডাকাতির ঘটনা কমে যাবে। 

বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর