২৩ নভেম্বর, ২০১৭ ২০:৫৮

কলেজছাত্র হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

কলেজছাত্র হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

বরিশালের গৌরনদী দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় কলেজছাত্র সাকির গোমস্তা (১৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ নিহতের বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হামলা-ভাঙচুরের সময় আসামিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত কলেজছাত্র সাকির গোমস্তার স্বজন, সহপাঠী ও ছাত্রলীগ কর্মীসহ শতাধিক লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে  ওই মামলার আসামি আশোকাঠি এলাকায় যুবলীগ কর্মী  ইলিয়াস গোমস্তা, মজিবর গোমস্তা ও সোহেল গোমস্তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়াও তারা সুমনের দোকানে ভাঙচুর করে। এ সময় তারা শাকিল গোমস্তা নামে এক যুবককে মারধর করে তারা। এক পর্যায়ে আসামিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায় বিক্ষুব্ধরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সাকির হত্যা মামলার ৩ আসামির বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায় নিহত কলেজছাত্রের স্বজন ও সহপাঠীরা। এছাড়াও তারা একটি দোকান ভাঙচুর করে। এ সময় তারা আসামিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

এদিকে ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে নিহত কলেজছাত্র সাকিরের মৃতদেহ গত বুধবার রাতে গৌরনদীর বাড়িতে এসে পৌছে। ওই রাতেই তার দাফন সম্পন্ন হয়। গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাকিরের মৃত্যু হয়। নিহত সাকির উপজেলার আশোকাঠি গ্রামের আইয়ুব আলী গোমস্তার ছেলে ও পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র ছিল। 

স্থানীয়রা জানান, যুবলীগ কর্মী সোহেল গোমস্তা ও রিয়াজ খান গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের গালাগাল করেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন কুমার রায়ের সঙ্গে যুবলীগ কর্মী সোহল ও রিয়াজের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন যুবলীগ কর্মী সোহল ও রিয়াজ। তখন সাকির গোমস্তা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ করলে রিয়াজ ও সোহেলের সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে রিয়াজ খান, সোহেল গোমস্তার নেতৃত্বে যুবলীগের ১০-১২ কর্মী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে স্কুল রোডে মাহাবুব হাওলাদারের দোকানের সামনে হামলা চালিয়ে কলেজ ছাত্র সাকির গোমস্তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আহত সাকিরকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শেবাচিম হাসপাতালে সাকিরের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সে মারা যায়।

এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে নিহত সাকিরের মা আলেয়া বেগম বাদি হয়ে ৬ জনের নামোল্লেখসহ ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর