১০ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৮:১৫

নাটোর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

নাটোর প্রতিনিধি:

নাটোর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

মুক্তিপণের দাবিতে ইটভাটার একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগে নাটোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজানসহ দুইজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়। রাতেই পুলিশ এক ইটভাটার ব্যবস্থাপককে গ্রেফতার করেছে। 

চেয়ারম্যানের দাবি নাটোর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম শিমুলের ইন্ধনে মিথ্যা কাহিনীতে মামলাটি করা হয়েছে। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার পাচু গাজীর ছেলে কফিল উদ্দিন শনিবার রাতে থানায় এসে নাটোর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও টিবিএম ইটভাটার মালিক শরিফুল ইসলাম ও ভাটার ব্যবস্থাপক মোঃ কালামের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন। 

মামলার এজাহারের বর্ণনা সূত্রে জানা যায়, বাদির ভাতিজা মোঃ পলাশ ও প্রতিবেশী মনিরুল ও টিপু নাটোর সদর উপজেলার পন্ডিতগ্রামের একটি ভাটায় ইট তৈরির কাজে এসেছিল। আসামিরা ৫ ডিসেম্বর তাদেরকে বেশী মজুরীতে কাজ দেওয়ার কথা বলে তাঁদের ইটভাটায় নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর তাঁদেরকে একটি ঘরে আটকে রেখে তাদের স্বজনদের কাছে মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। খবর পেয়ে বাদী শনিবার সকালে টিবিএম ইটভাটায় গিয়ে ৫০ হাজার টাকা আসামিদের দেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য তাঁরা আটকব্যক্তিদের ছেড়ে দেন নি। পরে তিনি থানায় হাজির হয়ে মামলাটি করেছেন। 

মামলা গ্রহণের পর পরই পুলিশ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের ওই ইটভাটায় গিয়ে সেখান থেকে তিন জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় ভাটার ব্যবস্থাপক মো. কামালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম আজ দুপুরে জানান, তিনি বা তার ব্যবস্থাপক কথিত উদ্ধার করা ব্যক্তিদের আদৌ আটকে রেখেছিলেন না। তারা ইট তৈরীর জন্য সর্দারের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা দাদন নিয়েছিলেন। ওই টাকা ফেরত না দেওয়ায় সর্দার তাদেরকে ভাটায় রেখে দিয়েছিলেন। তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়নি। তাঁরা এ ব্যাপারে মামলাও করতে চাননি। কিন্তু নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে তার রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় তিনি সর্দারের সাথে হাত করে মিথ্যা মামলাটি করিয়েছেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আদালত থেকে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

সদর সার্কেলের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত জানান, ইট তৈরীর আগাম টাকাপয়সা নিয়ে বাদীর লোকজনের সাথে আসামিদের দ্বন্দ্ব রয়েছে-এটা সত্য। তবে টাকার জন্য তাদের ঘরে আটক রাখার অভিযোগে মামলাটি নেওয়া হয়েছে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি এখনও তদন্তাধীন। 

নাটোর-২ আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, মামলার ব্যাপারে তার কোন হাত নাই। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা মামলাটি করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে ঘটনা সত্য কি না। তাকে এই মামলার ব্যাপারে আসামিরা যে দায় চাপাচ্ছেন তা শত্রুতা করে।


বিডি প্রতিদিন/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর