১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১২:২২

পঞ্চগড়ে মহাসড়কে ট্রাক স্ট্যান্ড, বাড়ছে দুর্ঘটনা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ে মহাসড়কে ট্রাক স্ট্যান্ড, বাড়ছে দুর্ঘটনা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকায় মহাসড়ক দখল করে গড়ে ওঠেছে ট্রাক স্ট্যান্ড। প্রতিদিন কয়েকশত ট্রাক মহাসড়কের উপড়েই দাঁড়িয়ে থাকার কারণে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সেই সাথে বাড়ছে দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা ব্যবসায়ী ও হাইওয়ে পুলিশকে দায়ী করেছেন। 

পঞ্চগড় জেলায় পাথর ব্যবসার গরুত্বপূর্ণ স্থান ভজনপুর। প্রতিদিন এই এলাকা থেকে উৎপন্ন কয়েক লাখ সি এফটি পাথর ট্রাকের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানী হয়। পাথর পরিবহনের কাজে নিয়োজিত এসব ট্রাক লোড বন্দোবস্ত এবং ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদন করার জন্য ভজনপুর বাজারে এশিয়ান হাইওয়ে খ্যাত মহাসড়কের উপরই দাঁড়িয়ে থাকে। 

পাথরের কোয়ারীতে লোডিং শেষে আবার ব্যাবসায়িক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ঐ মহাসড়কেই পাথর সহ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে মহাসড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়ে। এতে মানুষসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে বিঘ্নতার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত এই এলাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা। 

স্থানীয়রা জানায়, করতোয়া সেতু থেকে ডাঙ্গাপাড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা প্রতিদিন বন্ধ হয়ে থাকে। মহাসড়কের এই অংশের দুই পাশে রয়েছে দুটি কিন্টার গার্ডেন, একটি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হয়। গত নভেম্বর পর্যন্ত একবছরে ভজনপুর কিন্টারগার্ডেনের দুই জন, এবং বেগম ফকরুন্নেছা মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থী ট্রাক চাপায় এবং ৭ ডিসেম্বর এক পথচারী বাসের ধাক্কায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন মতিউর রহমান এই সড়কেই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বর্তমানে শয্যাশায়ী।  বিভিন্ন যানবাহনের ধাক্কায় প্রতিবছর অন্তত: ১০/১২ জন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত বা নিহত হয়। 

ভজনপুর কিন্টার গার্ডেনের শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক দখল করে শত শত  ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে। এর জন্য দায়ী ট্রাক ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও নেই। রাস্তায় কোন স্পিডব্রেকারও নেই।’

বেগম খালেদা জিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শত শত ট্রাক রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা বার বার হাইওয়ে পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। স্পিড ব্রেকারের জন্যও আবেদন করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দেরকে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়। 

উল্লেখ্য, ভজনপুরে একটি হাইওয়ে থানা থাকলেও অনেকেই হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভজনপুর পাথর বালি ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল জানান, সমিতির পক্ষ থেকে আমরা ট্রাকগুলোকে দ্রুত চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। তারপরও কাজ হয়না। এ ব্যাপারে হাইওয়ে থানা পুলিশের ভূমিকা রাখা দরকার। 

তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি এনামুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মহাসড়কে যেন ট্রাক না দাঁড়ায় এ জন্য গত দশ বারো দিন থেকে কড়াকড়ি অভিযান চলছে। তবে ভজনপুরে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড দরকার। এখানে ট্রাকের সংখ্যা জেলা শহরের থেকেও বেশী। 

 

বিডি প্রতিদিন/১১ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর