১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৩:৫৫

বৈরী আবহাওয়ায় শুঁটকি পল্লীতে কয়েক কোটি টাকার মাছ নষ্ট

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট :

বৈরী আবহাওয়ায় শুঁটকি পল্লীতে কয়েক কোটি টাকার মাছ নষ্ট

ফাইল ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে ৫ দিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন শুঁটকি পল্লীতে মাছ শুকাতে পারছে না জেলে-মহাজনেরা। কুয়াশা আর বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকার কাঁচা মাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দুবলা শুঁটকি পল্লীর দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প ইনচার্জ ফরেস্ট রেঞ্জার কাজী মোকাম্মেল কবির।

এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ আহরণে যেতে পারছে না গভীর সমুদ্রে। নানা প্রতিকূলতা ও একের পর এর দুর্যোগের কারণে দুবলারচরের শুঁটকি পল্লীর জেলে-মহাজনেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তসহ গত বছরের চেয়ে এ বছর শুঁটকি খাত থেকে মোটা অংকের রাজস্ব ঘাটতির আশংকার কথাও জানিয়েছেন এই বন কর্মকর্তা।
   
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও শুঁটকি পল্লীর জেলে-মহাজন সূত্র জানায়, বঙ্গোসাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলারচরে এখন মাছ শুকানোর পুরো মৌসুম চলছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ হঠাৎ নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-বৃষ্টিতে মাছ ধরা ও শুঁটকিকরণের কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে। দুবলার নিয়ন্ত্রণাধীন আশপাশের ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৩টি চরের কয়েক হাজার জেলে ও শতাধিক মহাজন এ সামুদ্রিক মাছ শুঁটকির সাথে জড়িত রয়েছেন। এ সব চরে উৎপাদিত শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। আর সুন্দরবন বিভাগ মাছের এই শুঁটকি পল্লী থেকে প্রতি মৌসুমে দুই কোটি টাকার অধিক রাজস্ব পেয়ে থাকে। তবে রাজস্বের এ পরিমাণ কম-বেশি নির্ভর করে আবহাওয়ার উপরই।
 
সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীতে থাকা মহাজনদের ডিপো (মাছ কেনার ঘর) ম্যানেজার মো. ফরিদ হোসেন ও আবু রায়হান বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা ৫ দিনের  দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জেলেরা সব জাল-নৌকা নিয়ে চরে অলস বসে রয়েছেন। মাছ ধরতে যেতে পারছে না। আর আগে তাদের আহরিত কয়েক কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রোদের অভাব ও বৃষ্টির কারণে শুকানোও সম্ভব না হওয়ায় তা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। 

খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী ও বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেরা সকল প্রকার ঝড়-ঝাপটা মোকাবেলা করেই নিরাপদে মাছ আহরণ করে সুন্দরবনের জেলে পল্লীতে শুকিয়ে থাকে। কয়েক দিন ধরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন শুঁটকি পল্লীতে মাছ শুকাতে পারছে না জেলে-মহাজনেরা। সামনে আরো কয়েক মাস শুঁটকি মৌসুম রয়েছে। পরবর্তীতে তারা এ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। 

তিনি আরও বলেন, দুবলা শুঁটকি পল্লীতে থাকা ফরেস্ট ক্যাম্প ইনচার্জসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঠিক রাজস্ব আদায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে সামুদ্রিক মাছ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ধরা পড়ায় এবার আশা করছি শুঁটকি খাত থেকে এবার রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আরো বেড়ে গেলে রাজস্বের এ পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।

বিডি-প্রতিদিন/১১ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর