১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ২০:০৮

শিশু মীমকে ধর্ষণ চেষ্টার পর শ্বাসরোধে হত্যা!

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

শিশু মীমকে ধর্ষণ চেষ্টার পর শ্বাসরোধে হত্যা!

কুমিল্লার চান্দিনায় উন্মোচিত হলো শিশু মীম হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে মূল হোতা ওমর ফারুককে (১৯) গ্রেফতার করার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। ওমর ফারুক চান্দিনা পৌরসভার বেলাশহর গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে। পেশায় সে গাড়ি চালক। আজ ম্যাজিষ্ট্রেট বিপ্লব কুমার দেবনাথের আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় লোমহর্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে।

তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায়, নিহত শিশু সুবর্ণা আক্তার মীম (৬) এর পাশ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা ওমর ফারুক। সে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালাতো। ঘটনার দিন গত ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে ওমর ফারুক তার প্রাইভেটকারটি পরিষ্কার করছিল। গাড়ি দেখে মীম এগিয়ে গেলে তাকে গাড়িতে চড়ানোর প্রলোভন দেখায় সে। মীমকে দিয়ে পুকুর থেকে পানি সরবরাহ করিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করে চালক ওমর ফারুক। দুপুর ১২টার কিছু পর গাড়ি পরিষ্কার শেষে ওমর ফারুক তার কথামত মীমকে গাড়িতে উঠিয়ে বেলাশহর আরএনআর ব্রিক্স ফিন্ড সংলগ্ন স্থানে এনে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এসময় মীম চিৎকার করে অচেতন হয়ে পড়লে গাড়ি চালক ওমর ফারুক তাকে ওড়না দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে গাড়ির পিছনের বক্সে লুকিয়ে রেখে গাড়িটি তার গ্যারেজে রেখে দেয়। 
প্রায় সাত ঘন্টা শিশুটির মরদেহ গাড়িতে থাকার পর সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টায় গাড়ি যোগে পাশ্ববর্তী থানগাঁও গ্রামের মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন একটি খালপাড়ে মীমের মরদেহ ফেলে আসে। বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ওই গাড়ি চালক তার গোপন একটি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে শিশু মীমের পিতা কোরবান আলীকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে সিম কার্ডটি ফেলে দেয়। 

চান্দিনা থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই কল লিস্টের সূত্র ধরে চান্দিনা থানার পুলিশ উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের বদরপুর-মেহার গ্রাম থেকে তাকে আটক করার পর এ তথ্য উন্মোচিত হয়। 
চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, মূলত যৌন তাড়নায় গাড়ি চালক ওমর ফারুক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এর আগে নিহতের মা খাদিজা আক্তার সিমু বাদী হয়ে মীম এর সৎ মা লাভলী আক্তার (৩৫) ও তার ছোট ভাই দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর গ্রামের মোস্তফা সরকারের ছেলে সালাউদ্দিন সরকারকে (৩২) আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাদীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সৎ মা ও মামাকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। 

প্রসঙ্গত, গত ৬ ডিসেম্বর থেকে শিশু মীমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন সকালে পাশ্ববর্তী গ্রামের থানগাঁও ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় গলায় ওড়না প্যাচানো অবস্থায় শিশু মীমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর