১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৭:২১

বগুড়ার কাহালু ও নন্দীগ্রাম থানা হানাদার মুক্ত দিবস বুধবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার কাহালু ও নন্দীগ্রাম থানা হানাদার মুক্ত দিবস বুধবার

বগুড়ার কাহালু ও নন্দীগ্রাম থানা হানাদার মুক্ত দিবস বুধবার (১৩ ডিসেম্বর)। ১৬ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত করে দেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করলেও এই দুই উপজেলা হানাদারমুক্ত হয় তিন আগেই। 

বগুড়ার কাহালু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নজিবর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক জানান, ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অত্র উপজেলার বামুজা, জয়তুল, নশিরপাড়া বীরপাল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ ও খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাকসেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের একের পর এক আক্রমণে অবশেষে পাকসেনারা পালিয়ে যায়। এরপর ১৬ জন পাকসেনা ১৩ ডিসেম্বর সকালে কাহালু চারমাথায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। এছাড়া বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলাও ১৩ ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনটি নন্দীগ্রাম থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালন করে থাকে। 

মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসে জানা গেছে, ভারতে ইউপি ডেরাডং সাব ডিভিশনে ভান্ডুয়া সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ৭ নম্বর সেক্টরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বাংলাদেশের হিলি সীমান্ত ও আক্কেলপুর হয়ে দেশে প্রবেশ করেন একদল মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রামে যাওয়ার পথে কাহালু থানার কড়ই নামুজা গ্রামে পাক হানাদারদের সাথে যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ২৮ জন পাক সেনা নিহত হয়। নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্ব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা ’৭১এর ৯ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে প্রবেশ করে। এরপর ১১ই ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার মন্ডল পুকুর সিএন্ডবি’র ব্রীজের পার্শ্বে থেকে পাকসেনা ও তাদের দোসরদের উপর আক্রমণ করে। শুরু হয় যুদ্ধ। ওইদিন উপজেলার রণবাঘা বড় ব্রীজের কাছে স্থানীয় রাজাকারদের সাথে এবং বেলঘরিয়ায় পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে পূর্ণখান নামে একজন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। খণ্ড খণ্ড এসব যুদ্ধের সর্বশেষ ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা থানা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় দু’শ পাকসেনা রাজাকারদের সাথে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকারকে আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। ৭১এর ১৩ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রামকে হানাদার মুক্ত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উড্ডয়ন করে। 

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) নন্দীগ্রাম থানা হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান জানান, ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে। এসময় রাজাকাদের সহযোগিতায় পাকসেনারা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে অর্ধশত রাজাকারকে আটক করা হয় এবং বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়। পরে ১৩ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। 

বিডি প্রতিদিন/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর