১২ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৯:০৮

বেলকুচিতে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে পৌর মেয়রকে লাঞ্ছিত!

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

বেলকুচিতে যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে পৌর মেয়রকে লাঞ্ছিত!

সিরাজগঞ্জ বেলকুচি পৌরসভা কার্যালয়ে মিটিং চলাকালে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা-ভাঙচুর ও পৌর মেয়রকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠেছে। আজ বেলুকচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা ও যুগ্ম আহবায়ক ফারুকের নেতৃত্বে কতিপয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় এ হামলা চালিয়েছে বলে পৌর মেয়র আশানুর বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন।  এ ঘটনায় বিকেলে পৌর মেয়র আশানুর বিশ্বাস স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আবু নুর মো. শামসুদ্দিন বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। 

মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস জানান, বেলকুচি পৌর সভায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১৪ জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। রেজা তার নিজের লোকজনকে পৌর সভায় চাকরি দেবার কথা বলে গোপনে তাদের নিকট থেকে বেশ কিছু টাকা নেয়। এরপর সে তাদের চাকরি দেবার জন্য আমাকে নানা ভাবে চাপ দেয়। এতে আমি রাজি না হওয়ায় রেজা সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারসহ সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে কুৎসা রটাতে থাকে। বিষয়টি জেলার নেতাদেরকে ইতোমধ্যে অবগত করা হয়েছে।  আজ বেলকুচি কলেজে নবীনবরণ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় কলেজের সাবেক ভিপি আমার ছেলে মিঠু বিশ্বাস গেলে তাকেও রেজা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর মিঠুর বিষয়টি জানাতে আমার কার্যালয়ে আসে। এরপর রেজা ও ফারুক হোসেনসহ কতিপয় সন্ত্রাসী সশস্ত্র অবস্থায় আমার কার্যালয়ে এসে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এসময় রেজা ও ফারুক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমাকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলিও ছোড়ে। গুলি অল্পের জন্য আমার শরীরে না লেগে ভবনে লাগে। এরপর সে আমার পরিষদের সদস্যদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও আমাকে লাঞ্ছিত করে। স্থানীয় লোকজন রেজাকে পরে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে আমি এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়াও বেলকুচি থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অবহিত করেছি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, যুবলীগ নেতার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুধু আমরা নই, পুরো বেলকুচিবাসী অতিষ্ঠ। অবৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রায়ই সে মহড়া দেয়। সম্প্রতি তার অত্যাচারের সীমাহীনভাবে বেড়ে গেছে। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ জানলেও কেউই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সাহস পায় না।   
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই আমার দু’জন অফিসার বেলকুচি পৌরসভায় গেলেও গুলির চিহ্ন পায়নি। গত ক’দিন আগে বেলকুচি ডিগ্রি কলেজে ক’জন ছাত্রের মধ্যে কথাকাটাকাটি নিয়ে রেজা ও মিঠু বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্ধ থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে পৌরসভা কার্যালয়ে লাথি ও দরজায় লাঠি দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন পাওয়া গেলেও গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। 

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আবু নুর মো. শামসুজ্জামান বলেন, পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি বেলকুচি উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক মো. সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে কতিপয় উশৃঙ্খল যুবক তার অফিসে হামলা চালিয়ে জানালা-দরজা ভাংচুর ও তার কার্যালয় লক্ষ্য করে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ২ রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার সাথে মোবাইলে বেশ কয়েকবার রিং করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর