১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ২০:২৪

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলে চুরি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেছেন তার ভাগ্নি জামাতা।

মামলায় ৫ জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে, ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে দুটি মামলার (মামলা নং ২২২/১৪, ২২/১৭) ওয়ারেন্টভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে গ্রেফতারকৃত আসামিদের ছাড়াতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী তদবির করেছেন বলে জানা গেছে।

চাঁদাবাজি ও চুরির মামলায় অভিযুক্ত ১০ জন আসামি হচ্ছেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই আলমগীর, ভাগ্নে কায়কোবাদ রুবেল, সামসুন্নাহার লাভলী (রুবেলের বোন), লুবনা (রুবেলের স্ত্রী), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মেরী বেগম, প্রিয়াংকা (রুবেলের ভাইয়ের স্ত্রী), লুতফা বেগম (জাহাঙ্গীরের বোন ও রুবেলের মা), আলমগীরের স্ত্রী (নাম পাওয়া যায়নি), লাভলীর বান্ধবী শিল্পী বেগম।  

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন, জাহাঙ্গীরের ভাগ্নে কায়কোবাদ রুবেল, তার স্ত্রী লুবনা ও বোন লাভলী। ওয়ারেন্টভুক্ত বাকি দুজন আসামি হচ্ছেন জাহাঙ্গীর আলম ও আলমগীর।

মামলার বাদী লাভলীর স্বামী মনির জানান, উক্ত মামলায় ১০ জনের মধ্যে ৫ জনের নামে ওয়ারেন্ট দিয়েছে আদালত। আমি ভালোবেসে ২০০২ সালে লাভলীকে বিয়ে করি। আমি পুলিশে চাকুরি করতাম, আমাকে নানাভাবে প্ররোচনা দিয়ে চাকুরি ছাড়িয়েছে সে। আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করতো লাভলী তার ভাই রুবেল ও মামা জাহাঙ্গীর। তাদের সাথে না পেরে আমি ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ডিভোর্স দেই।

''সংসার চলাকালীন আমাদের বিয়ের সময়ের ৫ ভরি স্বর্ণ আত্মসাৎ করেছে তারা। পরে আমার বাসা থেকে চলে আসার সময় আমার ঘর থেকে ব্যবসার ৫ লক্ষ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে আসে লাভলী। পালিয়ে আসার কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নির্যাতন করে নিয়ে যায়।''

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় জাহাঙ্গীর, লাভলী ও রুবেলের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে, ২০১১ সালে ও ২০১৩ সালে তাদের নির্যাতনে জিডি করি। ডিভোর্সের দুইমাস পর যৌতুক মামলা করে লাভলী। এখনো মামলা হাজিরা দিচ্ছি আমি। আমাকে নানাভাবে জাহাঙ্গীর ও রুবেল মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছে। তারা বলছে, আমি এখন জেলা আওয়ামী লীগের বড় নেতা, আইভী আমার সাথে আছে। তুই মামলা টামলা করে আমাদের কিছু করতে পারবিনা। ৫ লাখ টাকা না দিলে নারায়ণগঞ্জের কোথাও যদি তোকে দেখি জানে মেরে ফেলবো।

ফতুল্লা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সফিউল জানান, টাঙ্গাইলের একটি ওয়ারেন্ট আমাদের কাছে ছিল, সেখানে জাহাঙ্গীরসহ ৫ জন আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে। আমি সকালে একটি বাস থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। পরে আমার সাথে মোবাইলে কথা বলেন জাহাঙ্গীর। তিনি তখন মেয়র ''আইভীর'' পাশে বসা ছিলেন।

সফিউল জানান, মোবাইলে আমাকে তিনি বলেন ৩ জনকে ছেড়ে দিতে। আমি অস্বীকৃতি জানালে তিনি আইভীকে ফোনে ধরিয়ে দেন। মেয়র আমাকে বলেন, উনাদের কেন ধরেছেন। উনারা ঘুরে আসুক ছেড়ে দেন। এসে উনারা আদালতে হাজির হবেন।

''আমি মেয়রকে জানাই, আমার ছাড়ার কোন এখতিয়ার নেই কারণ এটা আদালতের ওয়ারেন্ট যা করার আদালত করবে আর ছাড়তে হলে এসপি বা ওসি সাহেবের অনুমতি লাগবে। পরে অবশ্য মেয়র আমাকে আর কিছু বলেননি''

তিনি আরো জানান, পরে ওসি সাহেবের সাথে আমার কথা হলে তিনি আমাকে আসামিদের থানায় নিয়ে যেতে বলেন। আসামিদের ওয়ারেন্টে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান সাফিউল।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর