১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৬:০৮

লাল-সবুজের উৎসবে পিছিয়ে নেই শিশু-কিশোর

নাজমুল হুদা, সাভার:

লাল-সবুজের উৎসবে পিছিয়ে নেই শিশু-কিশোর
যুদ্ধ জয়ের আনন্দ অতুলনীয়। আর সেই বিজয়ের ভেতর দিয়ে যদি অর্জিত হয় জাতীয় স্বাধীনতা, তবে সেই আনন্দ হয়ে ওঠে আরও অপরিসীম। বাঙালির জীবনে আজ সেই আনন্দের দিন। আজ থেকে ৪৬ বছর আগের এই কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের দিনে পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনী সম্মুখসমরে পরাজিত হয়ে নত মস্তকে দাঁড়িয়ে ছিল বীর বাঙালির কাছে। আজ চিরগৌরবের মহান বিজয় দিবস। হাতে দেশের পতাকা, মাথায় বাংলাদেশের মানচিত্রসহ ফিতা, আবার কারো কারো গায়ে লাল সবুজ রঙয়ের পোশাক। সবারই চোখে মুখে ছিল যেন বিজয়ের হাতছানি। ছেলে বুড়ো আর তরুণ-তরুণীর সাথে পাল্লা দিয়ে শিশুরাও বাবা-মা, বা চাচার হাত ধরে ছুটে চলে এসেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। লাখো শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদেও আত্নার মাগফিরাত কামনা করবেন।  আজ সকাল থেকে লাখো মানুষের জনস্নোতে শিশুদের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো।
 
ফারজানা আক্তার। আশুলিয়ার উত্তরলণ কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের শিক্ষার্থী। বাবা শফিকুলের হাত ধরে ছুটে এসেছেন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন বাবার সাথে। পাঁচ বছর বয়সী ওই শিশুর চোখে মুখে ছিল বিজয়ের ছোয়া। তরুণ-তরুণীদের শিশুরাও এখন যানতে চাই বিজয় দিবসের কথা। তাই বাবার হাত ধরে ছুটে চলে এসেছেন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এমনটাই জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম।
 
সানু আক্তার নামের ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী, চাচা সানোয়ারের সাথে সাভারের রাজাশন এলাকা থেকে স্মৃতিসৌধে এসেছেন। সবার সাথে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ২য় শ্রেণীর ওই শিশুও বীর শহীদদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করেন। সানু আক্তার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধেও কথা শুনেছি আর বাবার সাথে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে  বিজয় সম্পর্কে আরো নতুন কিছু দেখলাম ও বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানালাম। এবারই প্রথম চাচা সানোয়ারের সাথে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছেন। 
 
জারিফ আহম্মেদ সম্পদ , সমৃদ্ধ, এমদাদসহ আরো প্রায় ১০জন বন্ধু। ওরা সবাই সাভার অধরচন্দ্র স্কুলের শিক্ষার্থী। শনিবার সকালের প্রথম প্রহরের পর পরই জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে বীর শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আমিন মডেল টাউন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা স্মৃতিসৌধের উন্মুক্ত মঞ্চে ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিজয়ের গানে গানে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা মুখরিত করে রাখেন তারা।
 
আজ সকাল থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় শিক্ষার্থী, তরুণ-তরুণী, ছেলে-বুড়ো সব বয়সী মানুষের ছিল ঢল। কেউ তার বাবার বা ভাইয়ের হাত ধরে, আবার কেউ তার মেয়েকে নিয়ে, আবার অনেকেই এসেছেন পুরো পরিবার নিয়ে। তারা সবাই বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। মাথায় পতাকা বাধা, আর শরীরে লাল-সবুজের পোশাক। এ ছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
 
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর