১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৬:৪৩
সংবাদ সম্মেলন

যৌন নিপীড়নকারী অধ্যক্ষ'র পক্ষে পুলিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

যৌন নিপীড়নকারী অধ্যক্ষ'র পক্ষে পুলিশ!

ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহীর এক মাদ্রাসা অধ্যক্ষ'র পক্ষ নিয়ে পুলিশ মাদ্রাসাটির শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নগরীর ছোটবনগ্রাম এলাকায় অবস্থিত ‘জামিয়া রহমানিয়া’ নামের একটি মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এই অভিযোগ তুলেছেন।
সোমবার সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ আবদুল জব্বার ওরফে জিহাদীর বিরুদ্ধে ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের দুটি মামলা আছে। এর মধ্যে একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা। অধ্যক্ষর পক্ষ নিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা তাদের হয়রানির চেষ্টা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই মাদ্রাসার এক ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ জিহাদীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর জামিন নিয়ে তিনি ফের মাদ্রাসায় যোগ দেন।

কিন্তু এ বছরের ২৫ অক্টোবর আরেক ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে পুলিশ তাকে ফের গ্রেফতার করে। সম্প্রতি তিনি জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়েছেন। এর আগে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এখন চাকরি ফিরে পেতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ জন্য হয়রানি করতে অধ্যক্ষ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জুলফিকার আলী বলেন, সম্প্রতি অধ্যক্ষ জিহাদী মাদ্রাসার ভেতরে তার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন তার মামলারই তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের হুমকি-ধামকি দেন। পরে তিনিই অধ্যক্ষকে মাদ্রাসার বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন।

জুলফিকার আলী বলেন, গত বছর যখন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে তখন রমজান মাস ছিল। অধ্যক্ষ জিহাদী মসজিদে এতেকাফে ছিলেন। তাই তারা বিশ্বাসই করেননি, তিনি এমন কাণ্ড করেছেন। এ জন্য জামিনের পর তাকে মাদ্রাসায় নেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর তিনি হাতেনাতে আটক হয়েছেন। নির্যাতিত ছাত্র আদালতে জবানবন্দীও দিয়েছে। তাই তারা জিহাদীর শাস্তি চান। কিন্তু এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।

তবে জানতে চাইলে এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন এসআই গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সম্প্রতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিল বের করা হয়েছিল। এটা তারা করতে পারেন না। এ জন্যই তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এর মানে এই নয় যে তিনি অধ্যক্ষ জিহাদীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমি নিজেই জিহাদীকে গ্রেফতার করেছিলাম। তদন্ত কর্মকর্তা কখনও আসামির পক্ষ নিতে পারে না। অধ্যক্ষ জিহাদীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সাক্ষীরাও প্রস্তুত আছেন। মেডিকেল রিপোর্ট পেলেই তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।’

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর