২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৫:১৩

নওগাঁয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একই পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জুলেখা খাতুনকে মারপিটসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন ওই ইউপির ৯ জন সদস্য। এই ঘটনায় ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনোয়নকারী ৯ ইউপি সদস্যের মধ্যে ৮ জন আজ সোমবার বেলা ১১টায় পরিষদ সংলগ্ন গোটগাড়ী বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছে। মারপিটের কারণে গুরুতর আহত অবস্থায় মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় মহিলা সদস্য জুলেখা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না। 

সংবাদ সম্মেলনে ৮ জন ইউপি সদস্য বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হওয়া সত্ত্বেও আমাদেরকে না জানিয়ে চেয়ারম্যান মাইকিং করে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বয়ষ্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ডের মিটিং করা হবে বলে আমরা জানতে পারি। মিটিংয়ে যাওয়ার পথে গত রবিবার বেলা ১১টায় ওই ইউপির কলেজ মোড় নামক স্থানে পরিষদের মহিলা সদস্য জুলেখা খাতুন চেয়ারম্যানের পথরোধ করে মিটিং এর বিষয়সহ বয়ষ্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বিষয়ে জানার চেষ্টা করলে ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খান ক্ষিপ্ত হয়ে পাশে পরে থাকা কাঠের বাটাম দিয়ে ওই মহিলা সদস্যকে আঘাত করেন এবং লাথি মারে ফেলে দেন। এতে করে ওই মহিলা ইউপি সদস্য জুলেখা খাতুন মটিতে লুটিয়ে পড়ে যান। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় জনতা ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খানকে মারপিটসহ লাঞ্ছিত করেন। তারা আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উপজেলা এডিপি, রাজস্ব (বিশেষ) খাতের ৪ লাখ টাকার সেলাই মেশিন ক্রয় প্রকল্প সম্পর্কে ইউপি সদস্যদের কিছু না জানিয়ে ভুয়া রেজুলেশন দেখিয়ে সব টাকা আত্মসাৎ করেন। একইভাবে বিভিন্ন কার্যবিবরণী খাতায় ইউপি সদস্যদের জাল স্বাক্ষর করে প্রসাদপুর, বুড়িদহ ও খেয়াঘাটের ইজারার প্রায় ৫০ হাজার টাকা, উপজেলা বনবিভাগ হতে প্রাপ্ত ৪৫ হাজার টাকা, গোটগাড়ী হাটের ইজারার ৪৮ হাজার টাকা, গোটগাড়ী ধানহাটিতে সিসি ঢালায় ও নালা নির্মাণ বাবদ ৪ লাখ টাকা কাজ না করেই আত্মসাৎ করেন। নিয়ম অনুযায়ী কোন চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্য অধিক কোন প্রকল্পের সভাপতি হতে পারবেন না। কিন্ত ইউপির নিজস্ব খাতের ৫০ হাজার টাকার প্রকল্পের কাজ না করেই চেয়ারম্যান নিজেই সভাপতি সেজে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেন। টিআর-কাবিটা প্রকল্পের সভাপতি ছাড়াই চেয়ারম্যান নিজেই ওই প্রকল্পের প্রায় ২ লাখ টাকা এবং প্রসাদপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্যদের সম্মানী ভাতার ৫০ হাজার ৪০০ টাকা বর্তমান চেয়ারম্যান ভুয়া রেজুলেশান দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি ইউপি সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো প্রকার প্রতিকার পাওয়া যায়নি। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তারা (ইউপি সদস্যরা) ইউপির দৈনন্দিন কাজ করবেন না এবং চেয়ারম্যানকে কোন কাজে সহযোগিতা করবেন না।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, কেউ ইউপি সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে এসব অভিযোগ করিয়েছেন। আর মারপিটের বিষয়ে বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিটিংয়ে যাওয়ার পথে তারাই কলেজ মোড়ে আমার পথরোধ করে আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। 

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলার নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি, তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।

বিডি-প্রতিদিন/২২ জানুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর