২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৮:০৪

রাঙামাটি পাবলিক কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চলে কমিউনিটি সেন্টারে!

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি:

রাঙামাটি পাবলিক কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চলে কমিউনিটি সেন্টারে!

চার বছরেও নির্মাণ হয়নি রাঙামাটি পাবলিক কলেজের স্থায়ী একাডেমিক ভবন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে (মিনিষ্ট্রিয়াল ক্লাব) । নানা সমস্যা মধ্যেও বাধ্য হয়ে পাঠ দান অব্যাহত রখেছে শিক্ষকরা। তবে স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকার কারণে কিছুটা হতাশ শিক্ষার্থীরাও। এ কমিউনিটি সেন্টারে দিনে চলে পাবলিক কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। আর রাতে চলে বিয়ে, মেহেদী ও জন্মদিনের অনুষ্ঠান। এমন পরিবেশে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হিমশীম খাচ্ছেন শিক্ষকরা।

রাঙামাটি পাবলিক কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে রাঙামাটি পাবলিক কলেজ। তৎকালিন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামালের উদ্যোগে স্থাপিত এই কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের একটি কলেজ বাস উপহার দেন। দেওয়া হয় রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি এলাকায় পাবলিক কলেজের জন্য প্রায় ৩ একর জমিও বন্দোবস্তী। প্রায় ৫ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মানের কাজ হাতে নেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ভবন নির্মানের কাজ শুরু হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠে। বাতিল করা হয় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ। আর কার্যাদেশ বাতিলের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আইনী জটিলতায় আটকে যায় পাবলিক কলেজের ভবন নির্মাণ কাজ। ফলে রাঙামাটি পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
এদিকে, খুব দ্রুত রাঙামাটি পাবলিক কলেজটির সুনাম ছড়িয়ে পড়লেও নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকার কারণে ব্যস্তে গেছে সফলতার সব অর্জন। কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর পাহাড়ে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেলেও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, সুন্দর পরিবেশ, ছাত্রীদের কোমন রুম ও নিজস্ব কলেজ ক্যাম্পাস না থাকার পড়া-লেখায় আগ্রহ হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রমও। তাই কলেজ ভবন নির্মাণ জটিলতা যাই-ই হোক না কেন দ্রুত একাডেমিক ভবন নির্মানর কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছ রাঙামাটি পাবলিক কলেজ অধ্যক্ষ মো. তাসাদ্দিক হোসেন কবির। 
তিনি বলেন, রাঙামাটি পাবলিক কলেজের ভবন নির্মানের বরাদ্দটা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়। কাজ করার জন্য দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে। তারাও কলেজ নির্মাণের জন্য যথারিতি দরপত্র আহবান করেছিল। কাজও শুরু করা হয়। কিন্তু ঠিকাদারের  নিয়মনিতির জঠিলতা  কারণে সে কাজ বাতিল করা হয়। কাজ বাতিলের প্রেক্ষিতে একটি মামলাও হয়। কিন্তু সে মামলা কবে নিষ্পত্তি হবে সেটা আমার জানা নেয়। তবে আমাদের দাবি যে কোন ভাবে জরুরি ভিত্তিতে এ পাবলিক কলেজের একাডেমিক ভবন তৈরি করে দেওয়া হোক।  ৪ থেকে ৫টা কক্ষ কোন রকম করে দিলে পাবলিক কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া কিছুটা হলেও সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ভাইস চেয়ারম্যান তরুন কান্তি ঘোষ জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটি পাবলিক কলেজের প্রকল্পটা হাতে নিয়েছিল। ঠিকাদের মাধ্যমে আমরা কলেজ নির্মাণ কাজ শুরু করি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হাইকোটে একটা রিট করে। যার কারণে কলেজ নির্মাণ কাজটি স্থাগিত হয়ে যায়। হাইকোর্টে ওই রিটকে খারিজ করার জন্য আমরা জবাব দাখিল করেছি। মামলা নিষ্পত্তি হলে কলেজের ভবন নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরে রাঙামাটি পাবলিক কলেজের একাডেমি ভবন নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান ধর্মঘট করে আসছে শিক্ষার্থীরা। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর