২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৭:৪৮

উদ্বোধনের অপেক্ষায় কুকরী-মুকরী ইকো পার্ক

এম আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা):

উদ্বোধনের অপেক্ষায় কুকরী-মুকরী ইকো পার্ক

উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ভোলার পর্যটন দ্বীপ চরফ্যাসনের কুকরী-মুকরী ইকো-পার্ক। রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ বৃহষ্পতিবার সকালে আইল্যান্ড অফ ভোলা খ্যাত দ্বীপকন্যা কুকরী-মুকরীতে ইকো-পার্কের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে পার্কটি।

ইকো-পার্কের উদ্বোধন সাগরপাড়ের পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন মাত্রার যোগ করবে।  রাষ্ট্রপতির আগমনকে কেন্দ্র করে সাগরের ঢেউ আছঁড়ে পড়া কুকরী-মুকরীকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।  উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে দ্বীপের খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে। 

ভোলা জেলা সদর থেকে ১শ' ৭০ কি.মি. এবং চরফ্যাশন উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১শ’ কি.মি. দক্ষিণে বঙ্গোপসগারের কূল ঘেঁষে কুকরী-মুকরী পর্যটনদ্বীপের অবস্থান। প্রায় ২০ বর্গ কি.মি. আয়তনের ম্যানগ্রোভ বাগানসহ ৪০ বর্গ কি.মি. আয়তনের কুকরী-মুকরী একটি ইউনিয়ন। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা  ম্যানগ্রোভ বাগান, সাগরের ঢেউ আছঁড়ে পড়া বিস্তৃত সৈকত, হরিণ-বানরসহ নানান প্রজাতির বন্যপ্রাণীর কিচির মিচির, শিয়ালের হাঁক,  শীতের অতিথি পাখির কলকাকলি পর্যটকদের আকর্ষণ করছে এই দ্বীপ। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর কুকরী-মুকরী সফর করেন এবং কুকরী-মুকরীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দ্বীপটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। জাতির জনকের স্বপ্নের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার সেই সুদূর প্রসারী চিন্তার ধারাবাহিকতায় যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে কুকরী-মুকরী ইকো-পার্ক। 

কুকরী-মুকরীর চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন জানান, কুকরী-মুকরী ইকো-পার্কে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, হরিণ প্রজনন কেন্দ্র, ১শ’ ফুট উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার, শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইড, ম্যানগ্রোভ বাগানের অভ্যন্তরে ওয়াক ওয়ে, বাগানের খাল আর সাগর কূলে নৌ বিহারের জন্য আধুনিক নৌ-যানসহ পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য নানান আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে এই ইকো-পার্কে। 

ইকো-পার্ককে ঘিরে ৫ মেঘাওয়াট ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা হবে। এই ইকো-পার্ক প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। ইতোমধ্যেই পর্যটকদের জন্য ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফোর স্টার মানের আধুনিক রেষ্টহাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। যে রেষ্টহাউজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট এবং সুইমিংপুল আছে। বুধবার বিকেলে কুকরী-মুকরী পৌঁছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই রেষ্টহাউজে রাত্রীযাপন করবেন বলে জানা গেছে। 

চরফ্যাশন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ শুভ্র  জানান, বিশ্বখ্যাত আইফেল টাওয়ারের আদলে নির্মিত হয়েছে এই জ্যাকব ওয়াচ টাওয়ার। এটি চরফ্যাশনসহ ভোলাকে আলাদা পরিচিতি দেবে বলে আশা করছি। চরফ্যাশনের দক্ষিণে সাগর মোহনার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুকরি-মুকরি, ঢালচর, তারুয়া সৈকত প্রকৃতির এক অপার সৃষ্টি। কয়েক বছরে ওই স্পটগুলো ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন ওইসব এলাকায়। 

এদিকে বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো.আব্দুল হামিদ ও মিসেস হামিদ প্রথমে চরফ্যাশন আসবেন। চরফ্যাশন পৌঁছে রাষ্ট্রপতি উপজেলা সদরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুউচ্চ ‘জ্যাকব ওয়াচ টাওয়ার’ উদ্বোধন করবেন। পরে চরফ্যাশন টিবি স্কুল ময়দানে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন রাষ্ট্রপতি। সুধী সমাবেশ থেকে চরফ্যাশনের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজ, রহিমা ইসলাম কলেজ, চরফ্যাশন অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম টিসার্স ট্রেনিং কলেজ-এর একাডেমিক ভবন, এওয়াজপুর-রসূলপুর মৈত্রি সেতুসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কাজের ফলক উম্মোচন করবেন। 
                               

বিডি প্রতিদিন/২৩ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর