১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৩:১১

টাঙ্গাইলে নীতিমালা ভঙ্গ করে নির্মাণ হচ্ছে ইটভাটা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলে নীতিমালা ভঙ্গ করে নির্মাণ হচ্ছে ইটভাটা

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কলিয়া গ্রামে সকল প্রকার নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে ফসলি জমির পাশেই ইটের ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। অপরিকল্পিত ইটভাটা নির্মাণের কারণে পরিবেশের উপর মারাত্বক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। 

জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগসহ কোন বিভাগেরই লাইসেন্স ও প্রত্যয়ন মেলেনি ওই ইটভাটার অনুকূলে। পরিবেশ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ভাটা স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও কোন লাভ হচ্ছে না। প্রভাবশালী ভাটা মালিক নির্মাণ কাজ চালিয়েই যাচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকার সাধারাণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন (২০১৩) অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার এবং গ্রামীণ বা ইউনিয়ন পরিষদ রাস্তা থেকে অন্তত অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ বাসাইলের কলিয়া গ্রামে সব ধরণের নিয়ম ভঙ্গ করে স্থাপন করা হচ্ছে ইটের ভাটা। ভাটার দু’পাশেই এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আছে দু’টি বাজার, বসত বাড়ি ও তিন ফসলি জমি। ৫০ গজের মধ্যেই রয়েছে গ্রামীণ সড়ক। সেই রাস্তা দিয়ে তিন টনের অধিক মালামাল বহনকারী যানবাহন চলাচল করছে। যা ইটভাটা আইন নীতিমালার পরিপন্থী। 

সকল প্রকার সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে দেলোয়ার হোসেন এন্ড কোং নামের ওই ইটভাটার নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইট বানানোর কাজও চলছে পুরোদমে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইটভাটার উত্তরের গ্রাম কাউলজানী দক্ষিণ পাড়ার হোমিও চিকিৎসক আলতাফ হোসেন বলেন, এখানে ইটভাটার কাজ শুরু হলে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ধোঁয়ায় স্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রাত হবে মানুষ। গাছে কোন ধরণের ফল আসবে না। বাড়ি ঘরেও মানুষ বসবাস করতে পারবে না। অবিলম্বে ভাটার নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে হবে। 

এ ব্যাপারে ভাটা মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সবগুলো অধিদপ্তরে আমরা আবেদন করেছি ভাটা নির্মাণের অনুমোতির জন্য। এখনও অনুমোতি পাইনি। তবে দ্রুতই অনুমোতি মিলবে।

বাসাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এখানে কিভাবে ইটভাটা করছে বুঝতে পারছি না। এটি তিন ফসলি জমি। আমাদের কাছে প্রত্যয়ন চাওয়া হয়েছে। শেষে আমরা তিন ফসলের জমিরই প্রত্যয়ন দিয়েছি।

টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, কলিয়ার ইটভাটা নির্মাণে আমাদের কাছে একটি আবেদন করা হয়েছে। কোন অনুমোতি হয়নি। আমরা ভাটার মালিককে নোটিশ করেছি সকল প্রকার কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য। এরপরেও কার্যক্রম চালিয়ে গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহান স্বপ্না বলেন, ইটভাটা নির্মাণের জন্য তাদের লাইসেন্স নিতে হবে। আমি সরেজমিনে সেখানে যাবো। যদি লাইসেন্স না নিয়ে থাকে তাহলে ইটভাটার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিডি প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর