১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৪:৫০

লামায় রাতের আঁধারে পাচার হচ্ছে শত শত ট্রাক পাথর

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি:

লামায় রাতের আঁধারে পাচার হচ্ছে শত শত ট্রাক পাথর

বান্দরবানের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বেপরোয়া পাথর পাচারের কারণে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। পাথর পাচারে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালর্ভাট ভেঙ্গে স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৩০/৪০টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলী দেখিয়ে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই পাহাড় কেটে ও খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করছে। 

যোগাযোগ ব্যবস্থার ধ্বংসের পাশাপাশি অবৈধ পাথর উত্তোলনের কারণে এলাকার নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরিগুলো ইতিমধ্যে শুকিয়ে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ কাঁচা সড়কে অসংখ্য গাড়ি চলাচলের কারণে ধূলাবালিতে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত ধূলার কারণে স্কুল, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা এবং শ্বাসকষ্টসহ অসংখ্য রোগে ভুগছে সাধারণ জনগণ। 
 
স্থানীয়দের কথা বলে জানা যায়, ইউনিয়নের বনপুর হতে ইয়াংছা সড়ক, কালিরঝিরি মুখ হতে ঘিলাতলী হয়ে ডুলহাজারা সড়ক ও গয়ালমারা হতে ডুলহাজারা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১২০ হতে ১৫০ ট্রাক অবৈধ পাথর পাচার হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে ট্রাকে পাথর পাচারের বিষয়ে সত্যতা পেয়েছে। 

আরো জানা যায়, অনুমোদন না থাকায় দিনের চেয়েও রাতের অন্ধকারে বেশী পাথর পাচার হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাকগুলো চলাচল করে। স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলে পাথর ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়তে হয়। 

স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালীদের কাছ থেকে জানা যায়, ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৯নং ওয়ার্ডের ছমুখাল, পাইকঝিরি, ওয়াক্রা পাড়া, খ্রিস্টান পাড়া, মরা ঝিরি, চচাই পাড়া, কেরানী ঝিরি, কইতরের ঝিরি, বুদুম ঝিরি, চিনির ঝিরি, গয়ালমারা, বালস্ট কারবারী পাড়া ঝিরি, জোয়াকি পাড়া, বাকঁখালী ঝিরি, হরিণ ঝিরি, রবাট কারবারী পাড়া ঝিরি, বালুর ঝিরি, আলিক্ষ্যং ঝিরি, কাঁঠালছড়া ও বদুর ঝিরি হতে পাথর উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা। 

এইসব নদী, খাল, ছড়া ও ঝিরি হতে প্রায় ৬০ জন ব্যবসায়ী পাথর উত্তোলন করে বলে জানা যায়। 
 
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানান, আমার ইউনিয়নের কোন ঝিরি ছড়াতে ভাসমান পাথর নেই। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গত ৬/৭ বছর ধরে পাহাড় খুঁড়ে ও মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করছে। আমাদের বাধা প্রশাসনসহ কেউ পাত্তা দিচ্ছেনা।   

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু বলেন, এখনো পাথরের পারমিসন দেয়া হয়নি। রাতের আঁধারে পাথর পাচার হচ্ছে বিষয়টি আমাকে অনেকে জানিয়েছে। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। 


বিডি প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর