২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৭:৪০

৫ প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বিপাকে মোজাম্মেলের পরিবার

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

৫ প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বিপাকে মোজাম্মেলের পরিবার

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের লোহাগাঁও গ্রামের একই পরিবারের ৫ প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মোজাম্মেলের পরিবার।  এদিকে ৫টি সন্তান শারিরীক প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্ম নেওয়ায় গ্রামের কিছু মানুষ তাদের ভালো চোখে দেখে না। বাবা-মার ইচ্ছা যতটুকু সম্ভব লেখাপাড়া করে তারা যেন সমাজের বোঝা না হয়ে নিজেরাই স্বাবলম্বী হতে পারে। 

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের লোহাগাঁও গ্রামের মোজাম্মেল হক ওরফে বুধু তার ৫ প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে জীর্ণ-শীর্ণ একমাত্র কুড়ে ঘরে চরম দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। 

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে দিনাজপুরের কাহারোলের বলরামপুর গ্রামের আবেদ আলীর কন্যা বিউটি আরা খাতুনের সাথে মোজাম্মেল হক বুধুর বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের ঘরে এক এক করে ৬টি পুত্র সন্তানের জন্ম হলেও একমাত্র তৃতীয় পুত্র রিয়াদ (১৪) ছাড়া বাকী ৫টি সন্তানই শারিরীক প্রতিবন্ধী। এদের মধ্যে বড় ছেলে বিপ্লব (১৮), মিরাজ ওরফে রাসেল (১৫), রাজু (৯), রিশাত (৭) ও জীবন (৪)। 

এদিকে সংসারের ৮ জন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে অসহায় পিতা মোজাম্মেল হক বুধুকে কাজ করতে হয় চায়ের দোকানে। দিন হাজিরা ২শত টাকা আর চাষাবাদের বিঘা খানিক জমি চুক্তি দিয়ে যা পান তা দিয়ে ৮ জন মানুষকে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত দেয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে মোজাম্মেলের। বোচাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফরহাদ হাসান চৌধুরী ইগলুর সহযোগিতায় ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে মিরজা ওরফে রাসেল মাসিক ৫শত টাকা ও ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে বিপ্লব মাসিক ৬ শত টাকা করে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে। 

মা বিউটি খাতুন জানায়, একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে কষ্ট করতে হয়, সেখানে ৫টি প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে কী মানসিক ও শারিরীক যন্ত্রণায় ভুগছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। বাড়ির বাইরে গেলে অন্যরা তাদের দেখে বিদ্রুপ মন্তব্য করে। 
তিনি বলেন, তাদের লেখাপড়া জন্য ভর্তি করেছেন হাট মাধবপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলে। সপ্তাহে ৫দিন স্কুলের অটোতে করেই বিউটি খাতুন নিজেই ৫ সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যান ও আসেন। স্কুলে খেলার সাথী ও শিক্ষকদের সাথে মিশতে পেরে তারাও খুশি। পরিবারটি আশা করছেন তাদের বাকি তিনটি সন্তানই যেন প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

আটগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কফিল উদ্দীন জানান, এই অসহায় পরিবারটির পাশে আছি এবং থাকবো। এদের জন্য যা করার দরকার পরিষদ তাই করবে। 

বোচাগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আহসান হাবিব সাংবাদিকদের জানান, একই পরিবারের ৫ জন প্রতিবন্ধী একটি ব্যতিক্রম বিষয়। ইতিমধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর বোচাগঞ্জ অফিস থেকে দুই জনের ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকী তিনজনকেও ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর