শিরোনাম
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৯:৩৩

বিলাইছড়িতে ধর্ষণের শিকার অভিযুক্ত ২ বোন মা-বাবার হেফাজতে

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

বিলাইছড়িতে ধর্ষণের শিকার অভিযুক্ত ২ বোন মা-বাবার হেফাজতে

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির বিলাইছড়িতে যৌন নির্যাতনের শিকার মারমা সম্প্রদায়ের সেই দুই বোন এখন তাদের বাবা-মায়ের হেফাজতে রয়েছেন। গত ২২ জানুয়ারি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের অরাছড়ি নামক পাহাড়ি গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। 

জানা যায়, ঘটনার দিন ওই গ্রামের বাসিন্দা উশৈচিং মারমা ও সুইক্রাচিং মারমার দুই মেয়ের মধ্যে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বড় বোনকে ধর্ষণ এবং ছোট বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি জেলাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য কিছু আঞ্চলিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলন গড়ে তুলে। এর সর্বশেষ হাইকোর্টের আদেশে ১৫ ফেব্রুয়ারি দুই বোনকে তাদের বাবা-মা’র হেফাজতে নিরাপত্তায় হস্তান্তর করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে হাইকোর্টে করা এক আবেদনে বৃহস্পতিবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

ঘটনার পরদিন ২৩ জানুয়ারি ওই দুই মারমা তরুণীকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতের আদেশে ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে বাবা-মায়ের কাছে নিরাপত্তা হেফাজতে দেয়া হয়। বর্তমানে তারা পরিবারের সবাই রাঙামাটি শহরের পাথরঘাটা এলাকায় জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যার বাসায় নিরাপদে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। 

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, আদালতের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সেই দুই বোনকে তাদের বাবা-মা'র কাছে নিরাপত্তা হেফাজতে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিবারসহ তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যাপ্ত নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। 


এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ভিকটিম দুই মারমা তরুণী বর্তমানে শহরের পাথরঘাটার সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যার বাসায় তাদের বাবা ও মার সঙ্গে অবস্থান করছেন। তাদের বাবা উশৈচিং মারমা বলেন, তারা সেখানে নিরাপদে ভালোভাবে রয়েছেন।   

এদিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ভিকটিম দুই বোনকে বাবা, মা'র কাছে নিরাপত্তা হেফাজতে তুলে দেয়ার সময় চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়ের সহধর্মিনী রাণী য়েন য়েন রায়ের আপত্তি জানায়। কিন্তু তারপরও ভিকটিমের বাবা-মা তাদের মেয়ে দুইটাকে নিজেদের হেফাজতে দেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান। পরে পুলিশের সহায়তায় দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে উশৈচিং মারমা সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যার বাসায় আশ্রয় নেয়। তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ সদস্যরা। 

তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাণী য়েন য়েন রায়ের ওপর হামলার অভিযোগ এনে সম্প্রতি রাঙামাটিতে সংবাদ সম্মেলন করে নাগরিক সমাজের নেতারা। এরপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

অপর এক সূত্র জানায়, দুই মারমা তরুণীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় ২৩ জানুয়ারি পুলিশের পক্ষে বিলাইছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-৬৫০, তারিখ-২৩/০১/১৮) করা হয়েছে। পরে ভিকটিমদের পক্ষে তাদের নিরাপত্তার হেফাজত নিয়ে আদালতে আরেকটি পৃথক আবেদন করেন স্থানীয় কয়েক আইনজীবী।


বিডি প্রতিদিন/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল-তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর