২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১০:৫৮

ভিডিও ছড়ানো সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

ভিডিও ছড়ানো সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় আশরাফুল ইসলাম মাদবর মিঠুন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে কালেজছাত্রীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় বুধবার রাত ১১টার দিকে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে জাজিরা থানায় মামলা করেছেন।

মিঠুন জাজিরা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের খোড়াতলা গ্রামের আব্দুল মান্নান মাদবরের ছেলে।

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৬ সালে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে মিঠুনের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মিঠুন ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ওই ছবি ও ভিডিওকে পুঁজি করে মিঠুন তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

এরইমধ্যে পরিবারের সম্মতিতে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর বিয়ে হয় ওই ছাত্রীর। বিয়ের পর ওই ছাত্রী মিঠুনের ডাকে সাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে মিঠুন ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এছাড়াও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ওই ছাত্রীর স্বামীর হাতে তুলে দেন।

এদিকে মঙ্গলবার বিকালে মিঠুন মাদবরের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা জানায় ৫-৬ দিন যাবৎ সে এলাকায় নেই। এর আগেও মিঠুন ওই ইউনিয়নের আরো দুটি মেয়ের সাথে এমন প্রতারণা করেছে। ২০১৫ সালে এক ছাত্রীকে অপহরনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে জাজিরা থানায় একটি মামলা রয়েছে। ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি ওই মামলাটির অভিযোগপত্র  আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগি কলেজছাত্রী বলেন, মিঠুন আমার ছবি কাটপিচ করে ফেসবুকে দিয়েছে। আমাকে সামাজিকভাবে ছোট করেছে। আমি এর বিচার চাই । লজ্জা-অপমানে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আমার কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। 

মেয়ের বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি শিক্ষক মানুষ, এলাকার মানুষ আমাকে অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মান করে। সবসময় মাথা উচু করে সমাজে চলতাম। ঘরে বসে মেয়েকে নিয়ে শুধুই কান্না করি।

সেচ্ছাসেবক লীগের শরীয়তপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম সরকার বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মিঠুন মাদবরের এ অনৈতকি কর্মকাণ্ড আমার নজরে এসেছে। সাথে সাথে উপজেলা কমিটি থেকে তাকে বহিস্কার করার নিদের্শ দিয়েছি। তারা তাকে বহিস্কার করতে কালক্ষেপন করায় ১৮ ফেব্রুয়ারি আমিই জেলা কমিটির পক্ষে তাকে সাময়কিভাবে বহিস্কার করেছি।

জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক এনাম বলেন, ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর মিঠুন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা মিঠুনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

এর আগে গতবছর ১৫ অক্টোবর ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ছরিয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ওই নারীদের ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে।


বিডি প্রতিদিন/২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর