২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৪:৩৯

বাঁশ-সুতা-রঙিন কাগজের শহীদ মিনারে উপকূলীয় শিশু-কিশোরের শ্রদ্ধা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

বাঁশ-সুতা-রঙিন কাগজের শহীদ মিনারে উপকূলীয় শিশু-কিশোরের শ্রদ্ধা

অস্থায়ী শহীদ মিনারে বনফুলের মালা দিয়ে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে উপকূলীয় গ্রামীণ জনপদের হাজারো শিশু-কিশোর। কলাগাছ, কাঠ-কাপড়, কাঠের গুড়ি এবং রঙিন কাগজে সাজানো হয় এসব অস্থায়ী শহীদ মিনার। দেয়া হয়েছে রঙিন কাগজের মালা আর আর বেদীতে নাম না জানা বনফুল। সূর্যোদয়ের পর এসব বনফুল দিয়েই শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদ বেদীতে। র্নিঘুম রাত কাটিয়ে ক্লান্ত অবসন্ন এসব শিশু-কিশোরদের মলিন মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় দেখা যায় এসব শহীদ মিনারের স্তম্ভ বুকে রঙ্গীন কালিতে অ,আ,ই,ঈ,ক,খ বর্ণমালার আচড়। সাদা কাগজে রঙিন কালির অাস্তরনে লেখা রয়েছে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ ফেব্রুয়ারি, আমি ভুলিতে পারি।

কলাপাড়া পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকায় কয়েজন শিশু-কিশোরের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বাঁশ, সুতা, রঙিন কাগজসহ আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে তৈরি করেছে শহীদ মিনার। পাঠ্য বইয়ে, বড়দের কাছে জেনেছে ভাষা দিবসের কথা। সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকেই মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন। তাদের শ্রদ্ধা জানাতে নিজেদের হাতে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার অনেক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখনো স্থায়ী শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি। উপজেলায় ১৮৭টি সরকারি ও আধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২২টি বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে। শহীদ মিনারবিহীন বিদ্যালয়গুলোতে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে মাতৃভাষা দিবস পালন করে শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সরকার।

উপজেলার আয়ুমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ রানা বলেন, স্থায়ী শহীদ মিনার র্নিমাণনসহ মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষকরা এ ব্যাপারে উদাসীন।

বিডি প্রতিদিন/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর