২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ২১:০৭
আদালতে ঘাতকের স্বীকারোক্তি

শিবগঞ্জে পরকীয়ার জেরেই খুন হয় কলেজছাত্র কিরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া :

শিবগঞ্জে পরকীয়ার জেরেই খুন হয় কলেজছাত্র কিরণ

বগুড়ার শিবগঞ্জে পরকীয়ার জেরেই খুন হয় কলেজছাত্র গোলাম কিবরিয়া কিরণ। মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে বিধবা নারী মাকছুমা আক্তার মলি (৪০)কে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মাকছুমা শিবগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীকোলা গ্রামের দহপাড়ার মৃত দেলোয়ার সরকারের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু রায়হানের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে মাকছুমা আক্তার মলি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা করেছে। হত্যায় ব্যবহৃত স্ট্যাম্প, লুঙ্গি, বাই সাইকেল ও দুটো মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।  
পুলিশ জানায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মোকামতলা-সোনাতলা রোডের সাব্বিরজান নামক স্থানে কলাক্ষেত থেকে গোলাম কিবরিয়া কিরণ (৩০) নামের কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর কিরণের পিতা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে থানায় মামলা করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোকাকতলা তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রেজাউল করিম আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তির উদ্বৃতি দিয়ে জানান, নিহত কলেজ ছাত্র কিরণ তার গ্রাম সম্পর্কীয় নাতী। বিধবা দাদী মাকছুমা আক্তার মলি (৪০) এর সাথে একপর্যায়ে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে কলেজছাত্র কিরণ। এমন সম্পর্কের জেরেই দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাড়িতে কিরণের যাতায়াত ছিল। সম্পর্ক চলাকালীন সময়ে কিরণের দৃষ্টি পড়ে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের উপর। কিরণ গোপনে ওই মেয়ের গোসলের ভিডিও ধারণ করে দীর্ঘদিন থেকে ব্লাকমেইল করে আসছিল। মেয়ের সাথে কুকর্ম করার প্রস্তাবে রাজি করাতে তাকে বারবার চাপ দিচ্ছিল কিরণ। এরই এক পর্যায়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে কিরণ তাদের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ের সাথে কুকর্মের প্রস্তাব নিয়ে চাপ দিতে থাকে। এ প্রস্তাবে রাজি না হলে ভিডিও চিত্রটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি ও পথের কাঁটা হিসেবে তাকে হত্যার হুমকি দেয় কিরণ। বাকবিতণ্ডার একসময় ধস্তাধস্তিতে রুপান্তরিত হলে কিরণ মলিকে হত্যার জন্য আশেপাশে হাতিয়ার খুঁজতে থাকে। এসময় ঘরের মধ্যে থাকা একটি স্ট্যাম্প দিয়ে স্ব-জোরে কিরণের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে ছেলেদের পোশাক পরিধান করে কিরণের লাশ বস্তায় ভরে সাইকেলে করে নিয়ে কলাক্ষেতে ফেলে আসেন। পরদিন পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার মাত্র ৪ দিনেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। মোবাইল কলের সূত্রধরেই মঙ্গলবার বিকেলে মলিকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতেই হত্যার জট খোলে।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর