১৭ মার্চ, ২০১৮ ২২:১০

শরণখোলায় পাউবোর বাঁধে ধস, ৩০০মিটার নদী গর্ভে

শরণখোলা প্রতিনিধি:

শরণখোলায় পাউবোর বাঁধে ধস, ৩০০মিটার নদী গর্ভে

বাগেরহাটের শরণখোলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণাধীন উপকূলীয় বাঁধ রক্ষা প্রকল্পের ৩৫/১ পোল্ডারের বগী অংশের ব্যাপক এলাকা ধসে গেছে। 

শনিবার ভোর থেকে এদিন বিকেল পর্যন্ত ওই পয়েন্টে প্রায় ৩০০মিটার এলাকা বলেশ্বর নদীতে বিলিন হয়েছে। আরো প্রায় ৫০০মিটার এলাকা জুড়ে ফাঁটল ধরা অংশ রাতের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে নদীতে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধের ভয়াবহ ভাঙনে সাউথখালী ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

এছাড়া বগী বন্দর থেকে আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত আরো প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধের অন্ততঃ ১০টি পয়েন্টে বড় বড় ফাঁটল ধরেছে। বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই বাঁধের এসব ঝুঁকিপূর্ণ অংশ নদীতে বিলিন হয়ে যাবে। বাঁধ সম্পূর্ণ বিলিন হলে সাউথখালী ইউনিয়নের ৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। 

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কাজ চলমান থাকার মধ্যে বাধের এমন ভবয়াবহ ভাঙনে এলাকাবাসী আরো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কোস্টাল হেন্নান ওয়াটার ইম্প্রুভমেন্ট (সিএইচডব্লিউই) নামের চায়নার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ টেকসই বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করছে।

শনিবার বিকেল ৫টার দিকে সরেজমিন ভাঙন এলাকায় গিয়ে যায়, বড় বড় খন্ড ধসে পড়ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০মিটার বাঁধ নদীতে ধসে গেছে। ওই পয়েন্টে সম্পূর্ণ বিলিন হতে সামান্য বাকি আছে। আরো প্রায় ৫০০মিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ফাঁটল ধরেছে। 

এসময় বাধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী (৬০), শাহাজাহান হাওলাদার (৫৫), তাছেন উদ্দিন হাওলাদা (৭৫), আবু তালেব (৪৫) ইব্রাহিম হাওলাদার (৪৮) বলেন, ভোর ৫টার দিকে বাঁধের বিশাল অংশ দেবে যায়। ভাঙনের শব্দে বাধের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বাঁধের ভেতরের পাশেও বিশাল এলাকা নিয়ে ফাঁটল ধরেছে। ধারণ করা হচ্ছে রাতের মধ্যেই সমস্পূর্ণ বাঁধ বিলিন হয়ে যাবে। এতে বগী, চালিতাবুনিয়া, খুড়িয়াখালী, দক্ষিণ সাউথখালীসহ ৪টি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, পুকুরসহ কয়েকশ’ একর ইরি ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা বলেন, টেকসই বেড়িবাধের কাজ শুরু হওয়ায় এ এলাকার মানুষ একটু স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলো। কিন্তু কাজের ধীর গতি এবং কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। তাছাড়া, নদী শাসন না করেই বাঁধ নির্মাণ করায় তা কোনো কাজে আসছে না। একদিকে নির্মাণ কাজ চলছে, আরেক দিক থেকে ধসে পড়ছে। শুধু নামে টেকসই বাঁধ আসলে কাজের কাজ কিছুইনা। বাঁধ টেকসই করতে হলে আগে ব্লক ডাম্পিং করে নদী শাসন করতে হবে। তা না হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা নদী জলে ভেসে যাবে।

নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপকূলীয় বাঁধ রক্ষা প্রকল্পের (সিইআইপি) সুপারভেশন ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল দত্ত জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত রিং বাঁধ দেওয়া জন্য বলা হয়েছে। নদী শাসনের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

বিডিপ্রতিদিন/ ১৭ মার্চ, ২০১৮/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর