১৯ এপ্রিল, ২০১৮ ১৮:৩০

পঞ্চগড়ে ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ে ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগ

পঞ্চগড়ে সদর উপজেলার দিঘলগ্রামে তিন ফসলি জমিতে একটি ইটভাটা স্থাপনের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষকরা সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইট ভাটায় জমি দেয়ার জন্য কৃষকদের হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। 

ঐ এলাকার সহস্রাধিক মানুষের স্বাক্ষরিত অভিযোগে জানা গেছে, শুধু ফসলি জমিই নয় এই ইট ভাটা গড়ে উঠছে লোক বসতি এলাকার মূল রাস্তার পাশেই। তাই ভাটাটি স্থাপন হলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

জেলার সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দিঘলগ্রামে হঠাৎ করেই ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের চেষ্টা করছেন ইটভাটা ব্যবসায়ী আটোয়ারীর সাবেক চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম। ইটভাটা নির্মাণের মাগুড়া প্রধানপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন প্রধান ও কবির প্রধানের কাছে ৬ একর জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়ে এরই মধ্যে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন তিনি। ট্রাক্টরের মাধ্যমে মাটি আনা হচ্ছে। ইটভাটার চিমনির জন্য খাল খোড়া হয়েছে। ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করায় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ফসলি জমি বাঁচাতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত গণঅভিযোগ দাখিল করেছে। তাদের অভিযোগ ওই এলাকার ইটভাটা হলে ফসলি জমি নষ্ট হবে। কোন চাষাবাদ হবে না। এদিকে ভাটার আশে পাশের জমিগুলো কেনার জন্য মালিকদের নানা ধরনের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। 

সরেজমিন দেখা গেছে, ওই এলাকার জমিগুলো বেশ উর্বর। প্রতি বছর ওই এলাকায় ধান, মরিচ, ভুট্টা, পাটসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। এসব ফসল দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। 

কৃষক সেলিম হোসেন জানান, এখানে ইটভাটা হলে তার পাশে থাকা আমাদের জমিতে আর কোন ফসল হবে না। এই জমির ফসল দিয়েই আমাদের সংসার চলে। আমরা তখন কী করে চলব। 

কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের জন্য আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছি। তারপরও ক্ষমতার জোরে তারা ইটভাটা নির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভাটার জন্য আমাদের জমিও নাকি দিতে বাধ্য করবে তারা। ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানী রবি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এই এলাকায় অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাট বাজার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও হাটবাজারে চলাচলের জন্য রাস্তা একটিই। এই রাস্তার পাশেই ইটভাটা গড়ে উঠলে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে। পরিবেশেরও ভারসাম্য নষ্ট হবে। 

এ বিষয়ে ইটভাটা স্থাপনকারী সাবেক চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম জানান, আমি ইটভাটা নির্মাণ করব। পরিবেশের ছাড়পত্র নিয়েই করব। 

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোন ইটভাটা স্থাপন করতে দেয়া হবে না। আমরা ওই ইটভাটা স্থাপনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। 

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর